বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো এখন যাত্রী সংকটে ভুগছে, যার ফলে মালিক এবং কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কালোবাজারে কেবিন টিকিট বিক্রি হলেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও শীতকালে কিছুটা যাত্রী বাড়ে, তবুও খরচের তুলনায় তা যথেষ্ট নয়।
২০২২ সালের জুনে পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর থেকেই এই রুটে যাত্রী সংকট শুরু হয়। পদ্মাসেতু দিয়ে সড়ক যোগাযোগ সহজ হওয়ায় যাত্রীরা লঞ্চের বদলে বাস ব্যবহার করতে শুরু করেন। ফলস্বরূপ, এক সময় যেখানে প্রতিদিন ১০-১৪টি লঞ্চ চলাচল করত, সেখানে এখন মাত্র ৪টি লঞ্চ চলাচল করছে। বুধবার থেকে শনিবার ছাড়া অন্যান্য দিনে যাত্রী খুব কম থাকে, আর কেবিনের বড় অংশই ফাঁকা থাকে।
বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের নিয়মিত যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার আগে যাত্রীদের চাপের কারণে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, কেবিন পাওয়া যায় না এবং কালোবাজারে অতিরিক্ত টাকায় কেবিন নিতে হয়।
লঞ্চ কর্মচারীরা জানান, জানুয়ারি মাসে লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, এমভি পারাবত লঞ্চের কর্মচারী বাবুল শরীফ বলেন, এখন কোনোভাবেই লঞ্চে পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যায় না। এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের সুকানী মো. শাহ আলম জানান, কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে মাত্র ৩শ’ যাত্রী নিয়ে বরিশালে আসেন। অন্যদিকে, পারাবত ১২ লঞ্চের শাহীন হোসেন জানান, ডিসেম্বরের শেষে কিছু যাত্রী ছিল, কিন্তু জানুয়ারিতে তা আরও কমে গেছে।
লঞ্চ মালিকরা জানান, একটি লঞ্চের চলাচল খরচ পুষিয়ে তুলতে প্রতিটি ট্রিপে কমপক্ষে ১০০০ যাত্রী প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে অর্ধেক যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না, যার ফলে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
বর্তমানে, এই নৌরুটে শুধুমাত্র ১২টি লঞ্চ চলাচল করছে এবং সপ্তাহে শুধুমাত্র দুইটি লঞ্চ ঢাকা ও বরিশাল থেকে যাত্রা করছে। যাত্রী কমে যাওয়ায় লঞ্চ মালিকরা বিপর্যস্ত, এবং যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তবে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।