নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক ছিলেন মাওলানা অধ্যাপক আখতার ফারুক। তিনি ১৯২৯ সালে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভী ইদ্রিস আহমেদ ছিলেন কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
তিনি ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বাংলা সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার রচিত গ্রন্থাবলির মধ্যে রয়েছে- খালেদ ইবনে ওলীদ, দাংগা (উপন্যাস), পশুবাদ পুঁজিবাদ সমাজবাদ, সঞ্চয়িতা পরিক্রমা, তওবার রাজনীতি ও সংলাপ, জাহান্নামের আগুনে বসিয়া, মরণ মিছিল (কাব্য), স্বর্গাভিযান (কাব্য), প্রেমের ঝরনা (কাব্য), আমার ছড়া পড়া, বড়দের ছড়া, তারানায়ে মোজাহেদ, আজাদীর ফরমান, আল ইনসাফ, ফুটল গোলাপ ইরান দেশে, কিশোর এলো বীরের বেশে, বাদশাহ চলেন ফকীর বেশে, শহীদ হলেন হেসে হেসে, কাঁপলো ভারত যাহার ত্রাসে, উচ্চতর বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা।
তিনি বিশ্বখ্যাত বেশ কিছু গ্রন্থ বাংলায় ভাষান্তর করেন। যার মধ্যে রয়েছে- তাফসীরে ইবনে কাছীর, যাদুল মাআদ, মুজিযাতুন্নবী, মিনহাজুল আবেদীন, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা, ফাতহুর রাব্বানী (ঐশী প্রেরণার অনন্ত উৎস), পথহারা উম্মতের পথনির্দেশ, সীরাতে পাক রাসূল, সাহাবা চরিত, বিশ্বসভ্যতা বিনির্মাণে খোলাফায়ে রাশেদীন, যে সত্যের মৃত্যু নেই, ইসলামের দৃষ্টিতে নারী, জবানবন্দী, আসহাবে কাহাফ, কুরআন ব্যাখ্যার মূলনীতি, হযরত ইউসুফ, গন্তব্যের রাজপথ, আজাদ পত্রাবলী ও লন্ডনের ভাষণ।
১৯৬০ সালে এমএ পাস করে তিনি পুরান ঢাকার তৎকালীন কায়দে আজম কলেজে (বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ) বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি প্রখ্যাত দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায় তাফসির বিষয়ে কিছুকাল পাঠদান করেন। অধ্যাপক আখতার ফারুক ১৯৬৯ সালে দৈনিক সংগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৮১ সালে উপমহাদেশের বরেণ্য বুজুর্গ হজরত হাফেজ্জি হুজুর রহ:-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি খেলাফত আন্দোলনে যোগদান করেন। খেলাফত আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক হিসেবে আখতার ফারুক স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অধ্যাপক আখতার ফারুক ঢাকার বাসভবন সংলগ্ন পান্থপথ জামে মসজিদের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ মসজিদেই আসরের জামাতের কাতারে দাঁড়ানো অবস্থায় ২০০৬ সালের ২৯ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন।