মো. নুর উল্লাহ আরিফ, চরফ্যাশন॥ জানুয়ারি মাসের দুই-তৃতীয়াংশ সময় পেরিয়ে গেলেও ভোলায় স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনো ডিসেম্বর’২৪ মাসের বেতন ভাতা পাননি। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। নির্দিষ্ট আয়ের অনেক শিক্ষক-কর্মচারী তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কবে নাগাদ পাবেন তারও কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না তারা।
জানুয়ারি ‘২৫ মাস থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্কুল কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের ডিসেম্বর মাসের বেতন ভাতাদির সরকারি অংশ ইলেকট্রনিকস ফান্ড ট্রান্সফারের ( ইএফটির) মাধ্যমে দেওয়া শুরু করে। অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী জানুয়ারি মাসের এক তারিখ ও গতকাল ডিসেম্বর মাসের বেতন পেলেও আটকে যায় অনেক শিক্ষক কর্মচারীর বেতনের অংশ। বেতনভাতা বঞ্চিত শিক্ষক করর্মচারীদের অভিযোগ সামান্য ভুল ত্রুটির জন্যও তাদের বেতনের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা অফিস সূত্র বলেছে, সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয় পত্রের উভয়টির সাথে নিজ নাম ও জন্ম তারিখের অসংগতির কারণে বেতনের অংশ আটকে আছে। যাচাই-বাছাই চলছে সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে। দুলারহাট আদর্শ কলেজের এক শিক্ষক জানান, তাদের প্রায় ২৫ জন শিক্ষক কর্মচারী বেতন ভাতাদি পাননি। কী কারণে পাননি তা তারা জানেন না। ইএফটি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অনলাইনে প্রেরণের সময় বারবার যাচাই করে প্রেরণ করেছেন। তখন কোন বিচ্যুতি দেখেননি।
বেতন বঞ্চিত শিক্ষক কর্মচারীরা একে অন্যের কাছে খোঁজ খবর নিচ্ছেন কেন তাদের বেতন আটকে গেল? কেউ কেউ দায়সারা জবাব দিলেও একটি দালাল চক্র তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্ম তারিখের অসংগতিটা একটু বেশি হওয়ায় দালাল চক্র তাদের দিকে ঝুকে পড়ছে। তাদেরকে মোটাদাগে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাচ্ছে দালাল চক্রটি।
এদিকে মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীদের মাসিক বেতনভাতা এখনও ইএফটির মাধ্যমে প্রদান করা শুরু হয়নি। তারা জানান, খুব সম্ভবত আগামী জুলাই মাস থেকে প্রদান করা শুরু হবে। মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারীরা যাতে ইএফটির মাধ্যমে বেতন ভাতা পেতে কোন ভোগান্তির শিকার হতে না হয় সে জন্য আগ বাড়িয়েই কাগজপত্রের ত্রুটিবিচ্যুতি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু কাগজপত্রের ত্রুটিগুলো সংশোধনের আবেদন অনলাইনে প্রেরণের কোন সুযোগ নেই। সরাসরি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে গিয়ে আবেদন প্রদান করতে হয়। এ জন্য শিক্ষক কর্মচারীদের ব্যাপক ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়। তাই তাঁদের দাবী এ সংক্রান্ত আবেদন করার সুযোগ যেন অনলাইনে করার বিধান করা হয়।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) খন্দকার ফজলে গোফরান জানান, ভোলায় ইএফটির মাধ্যমে স্কুল কলেজের শিক্ষকদের প্রাপ্য বেতনভাতাদি সিংহভাগ শিক্ষকই পেয়েছেন। বাকীদের বিষয়েও অধিদপ্তরে কাজ চলছে। সামান্য ত্রুটিবিচ্যুতিগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে। জটিল সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।