চরফ্যাশন প্রতিনিধি॥
ভোলা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত দিবস। ১০ ই ডিসেম্বর ভোলার আকাশে প্রথম ওড়ে স্বাধীন দেশের পতাকা।ভোলার মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে এদিন। দীর্ঘ ৯ মাসের সসস্ত্র যুদ্ধ ও ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়।
ভোলায় পাকিস্তানি হানাদা বাহিনী এক পৈশাচিক বর্বোরোচিত তাণ্ডব চালায়। ভোলা শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস চত্বর দখল করে পাক-হানাদার বাহিনী ক্যাম্প বসায়। ক্যাম্প থেকে হানাদাররা চালায় নারকীয় কর্মকাণ্ড। মুক্তিকামী নিরীহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে হত্যা করা হয়। লাশগুলোও দাফন করা হয় সেখানে।
ভোলার খেয়াঘাট এলাকাও মুক্তিযোদ্ধারের ধরে এনে হত্যা করে তেতুলিয়া নদীতে ফেলে দেওয়া হয় রক্তে রঞ্জিত হয় তেতুলিয়ার পাড় মুক্তিযোদ্ধা সাধারণ মুক্তিকামী মানুষের রক্তে। ।১৯৭১ সালে দেশ রক্ষায় সারাদেশের মতো ভোলাতেও চলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। সরকারী স্কুল মাঠ, বাংলা স্কুল, টাউন স্কুল মাঠ ও ভোলা কলেজের মাঠের কিছু অংশে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পুরুষ মুক্তিযোদ্ধা ও বহু নারীকে ক্যাম্পে ধরে এনে রাতভর নির্যাতন করে সকাল বেলা লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তৎকালীন সময়ে অগণিত মানুষ মারা যায় ওই হানাদার বাহিনীর হাতে। তাদের গণকবর দেওয়া জায়গাটি এখন বধ্যভূমিতে রূপান্তর করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয় ভোলার ঘুইংঘারহাট, দৌলতখান, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিনের দেউলা ও চরফ্যাশন বাজারে। ওই সব যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন। পাশাপাশি বহু পাক সেনাও মারা যায়।
অবশেষে ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে টিকে থাকতে না পেরে ক্যাম্প থেকে লঞ্চযোগে পাক বাহিনী পালিয়ে যায়। ওই দিনই ভোলার আকাশে উড়ানো হয় স্বাধীন দেশের পতাকা। ভোলা পরিণত হয় উৎসবের শহরে। রচিত হয় এক নতুন ইতিহাস।