মোশাররফ মুন্না॥
বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে রবিবার (১২ জানুয়ারি) তিন দফা দাবিতে চাকরিচ্যুত সাবেক বিডিআর সদস্যদের মানববন্ধন পালিত হয়।
মানববন্ধনে তারা বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর এদেশেরই সন্তান, কোটি মানুষের নিরাপত্তায় আমরা সীমান্তে প্রহরারত ছিলাম। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দুজন বীর শ্রেষ্ঠ সহ অসংখ্য বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক রয়েছেন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেকেই জীবন দিয়েছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমরা একমাত্র বাহিনী ছিলাম, যারা সীমান্তে নাফ যুদ্ধ, পাদুয়ার যুদ্ধসহ অসংখ্য সীমান্ত যুদ্ধে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে আমরা জয়লাভ করেছি। আমাদেরকে প্রাপ্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
এসময় চাকরিচ্যুত সাবেক বিডিআর বলেন, ২০০৯ সালে হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর মাধ্যমে বিডিআর হত্যাকান্ড ঘটায়। হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়েই হাসিনা তার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্য ও এদেশের জনগণের। অন্যায়ভাবে দেয়া সাজা বাতিল করে সদস্যদের মুক্তি এবং চাকরিচ্যুত সদস্যদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দিয়ে চাকরিতে বহাল করতে হবে।
মানববন্ধনে বিডিআর সদস্যদের তিন দফা দাবি হলো- পিলখানা নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জন হত্যাকাণ্ডের পেছনে দায়ী ব্যক্তিবর্গ এবং নেপথের নায়কদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিত করা এবং সদস্যর সাজার মেয়াদ শেষ ও খালাস প্রাপ্ত তাদের মুক্তির দাবি জানায়।
প্রহসনের ১৮ টি স্পেশাল কোর্টের মাধ্যমে গণহারে গ্রেফতার করে যাদেরকে অন্যায় ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সরকারি সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা যেমন: রেশন, বেতন-ভাতা দিয়ে পদোন্নতিসহ পুনরায় চাকরিতে পুনঃ বহাল বা যোগদান করাতে হবে।
তদন্ত কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং নির্ভয়ে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ২ এর ঙ ধারা অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকার পিলখানায় সংগঠিত হয় এই হত্যাকান্ড। এই ঘটনা অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে। তবে তড়িগড়ি করে যে বিচার কাজ শুরু হয়েছিলো, তাতে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৫২ জন কে মৃত্যুদন্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়; আরও ২৫ জন জড়িত থাকার কারণে তিন থেকে দশ বছরের মধ্যে কারাদণ্ড পেয়েছিল। আদালত অভিযুক্ত ২৭৭ জনকেও খালাস দিয়েছিল এবং চাকরিচ্যুত করা হয় প্রায় ২০ হাজার বিডিআর সদস্যদের।