বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
Mizan
Mizan

ভ্রমন পিপাশুদের কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে সাজেকের বিকল্প মিরিঞ্জা ভ্যালী

মিজানুর রহমান ॥ পাহাড়-পর্বত ও মেঘের অসাধারণ মিলনে অরণ্য আর সমুদ্রপ্রেমী ভ্রমনকারীদের জন্য সেরা গন্তব্য এখন বান্দরবানের লামা উপজেলার মিরিঞ্জা ভ্যালি। অতি উচ্চতার নিঃসীম শূন্যতা উপভোগ করতে সবুজ বনে আচ্ছাদিত পাহাড়ি রাস্তা ট্রাকিং করা নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য হলেও ভ্রমন পিপাশুদের কাছে আনন্দে ভরপুর। এরই মাঝে দু-একটি সুদৃশ্য ঝর্ণা যেন বিস্ময়ের অববাহিকায় দিয়ে যায় রোমাঞ্চকর পরশ। চূড়ায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সেই অনন্ত শূন্যতার সঙ্গে আলিঙ্গনটা যেন এত কষ্টের স্বার্থকতা এনে দেয় । এর সঙ্গে দৃষ্টিসীমানায় কাঙ্খাতি সাগরের দৃশ্য জুড়ে দিলেই তা মিলে যাবে মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আরো স্বার্থকতা। সাজেকের বিকল্প হিসেবে পরিচিত এই জায়গাটি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে।

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম পাহাড়ী জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলায় হলেও কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আলীকদম সড়কে এই নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে প্রায় ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিকে ঘিরে এই মিরিঞ্জা ভ্যালির অবস্থান।

পাহাড়ি রাস্তা ও ঝিরিপথ পেরিয়ে মিরিঞ্জা ভ্যালির চূড়ায় আরহণের পর সাঙ্গু নদীসহ বিশাল পাহাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি পাশাপাশি দূরে দেখা যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং এখান থেকে দিগন্তরেখায় কক্সবাজার অংশের বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশিসহ দৃশ্যমান হয় লাইট হাউস,যার ক্ষীণ আলোয় সরু রেখায় আলোকিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত। এই চূড়া থেকেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখায় মুগ্ধতার পরিসর আরও একটু বাড়িয়ে দিবে। পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের টাইটানিক জাহাজের কাঠামোটিও এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই উপজেলা শহরে চাকমা, মারমা, ম্রোং ও ত্রিপুরাসহ মোট ১১ জনগোষ্ঠির বসবাস।

মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়ার জন্য বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে সকালে ২/৩টি লঞ্চ ছেড়ে যায় মজুচৌধুরীর হাট ওখান থেকে বাসে চট্রগ্রাম লামা,আলীকদমগামী বাসে মিরিঞ্জা ভ্যালির পাদদেশে অথবা চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী বাসে চকরিয়য়া নেমে লামাগামী বাস,চান্দেরগাড়ী,সিএনজি যোগে সহজেই পৌছে যাওয়া যায় মিরিঞ্জা ভ্যালিতে। অথবা  রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ,ফকিরাপুল বা সায়েদাবাদ,যাত্রাবাড়ী থেকে কক্সবাজারের বাসে চকরিয়া বাস টার্মিনালে। এবং চকরিয়া থেকে লামা-আলীকদম সড়ক ধরে মিরিঞ্জা ভ্যালিতে যাওয়ার সিএনজি, জিপগাড়ি বা লোকাল বাস,চান্দের গাড়ী পাওয়া যায়। এই পরিবহনগুলো লামা-আলীকদম পথে মিরিঞ্জা পাহাড়। যেখানে মেইন রোড থেকে ভ্যালি মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা পথ।

মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে পাহাড়ের উপরের বাঁশ ও খড়ের মাচাং এবং জুম ঘরগুলো থাকার জন্য যথেষ্ট পরিবেশবান্ধব। এছাড়া পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতর খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বেশ কয়েকটি তাবু ঘর। তাই রাতে ক্যাম্পিং নিয়েও ঝামেলা নেই। ট্রেকিং বা আশপাশ ঘুরে দেখার সময় শুকনো খাবার, পানি,টর্চলাইট ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম  সাথে নেওয় ই ভালো। তবে ব্যাগ খুব বেশি ভারী না হওয়া ই উচিত। পাহাড়ী এলাকায় ঘুরতে গেলে অবশ্যই দল বেঁধে যাওয়া উত্তম। সার্বিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে কিছু জায়গায় চেকিং হতে পারে। তাই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পেশাগত পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা আবশ্যক। পাহাড়ের ওপর নির্বিঘেœ চলাফেরা করার জন্য ভালো গ্রিপসহ মজবুত জুতা পরে যাওয়া জরুরি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে ভালো ব্যবহার এবং কোনো অবস্থাতেই যেন তাদের সংস্কৃতির প্রতি অযাচিত মনোভাব প্রদর্শন কারা থেকে বিরত থাকা বাঞ্চনী।

আরো পড়ুন

excident

বিএম কলেজ সংলগ্ন সড়কে শিশু নিহত, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ বছরের শিশু জান্নাত নিহত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *