বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক ॥ বরিশাল নগরের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মহানগর পুলিশের চারটি থানা নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে, চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এসব অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে, পাশাপাশি বরিশাল সিটি করপোরেশনও (বিসিসি) সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে।
পুলিশের বসানো ক্যামেরাগুলি সচল থাকলেও, বিসিসির বসানো ক্যামেরাগুলোর অধিকাংশই কাজে আসছে না। কিছু ক্যামেরা চুরি হয়ে গেছে, আবার কিছু ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়েছে।
নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুই কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বরিশাল নগরে ৪৪০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। সেগুলোর তদারকি করতে আটটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রও স্থাপন করা হয়। তবে উদ্বোধনের পর দুই মাসের মধ্যে ক্যামেরার প্রায় ৮০ ভাগ ক্যাবল (অপটিক্যাল ফাইবার) চুরি হয়ে যায় এবং বেশ কিছু ক্যামেরার কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে ক্যামেরাগুলো অচল হয়ে পড়ে। পরবর্তী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এসব ক্যামেরার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি, ফলে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলিও অচল হয়ে পড়ে।
বর্তমানে, এসব ক্যামেরার অবস্থা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, ক্যামেরা ও তারের অধিকাংশই চুরি হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিস্টেমটি পুনরায় চালু করা সম্ভব নয় এবং নতুন করে স্থাপন করতে হবে।
২০২০ সালে বরিশাল মহানগর পুলিশ নগরের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৯টি সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেয়। এরপর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় ধাপে ২৬০টি উন্নত সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু, গত বছর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় একটি চক্র নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ১২০টি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে, যার ফলে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যায়। তবে, পুলিশ আবার নতুন ১২০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মনে করেন, সংঘবদ্ধ একটি চক্র নগরজুড়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পুলিশের সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলেছে, যার ফলে অপরাধী চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে, তিনি বলেন, ক্যামেরাগুলো প্রতিস্থাপন করলে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ কমে আসবে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, “চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে ভুক্তভোগীদের অবশ্যই থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, যদি সিটি করপোরেশনের সিসি ক্যামেরাগুলি সচল থাকত, তবে বরিশাল নগর আরও নিরাপদ হতো।