বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
দালাল-হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় যেন পাসপোর্ট অফিসের চিরচেনা চিত্র। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর ঝালকাঠি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। এখন পাসপোর্ট করতে এসে কেউ হয়রানি বা বিরক্তি নিয়ে ফিরে যান না বলে জানিয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা।
বিগত দু’দিন অনুসন্ধান ও মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাসপোর্ট অফিসে চিরচেনা জটলা নেই। সব ফ্লোরে সবাই স্বস্তি নিয়ে ই-পাসপোর্ট করছেন। এছাড়া সহকারী পরিচালক ও উপসহকারী পরিচালক অফিস ঘুরে ঘুরে নজরদারিতে রাখছেন। বাইরে কোনো দালালকে দেখা যায়নি। বর্তমানে এখানে মাত্র ৪টি উপজেলার মানুষ ই-পাসপোর্ট করছেন। উপজেলাগুলো হলো, ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া।
পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের হোসনেয়ারা বেগম জানান, আমি সৌদি আরব যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে এসেছি। বর্তমান সেবার মান নিয়ে আমি খুশি। আমি একজন আনসার সদস্যের মাধ্যমে আবেদন করেছি। ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে ৫৭৬০ টাকা সরকারি খরচ হয়। কিন্তু ওই আনসার সদস্যকে ৬ হাজার টাকা দিয়েছি। বেশি টাকা দেইনি। এ ছাড়া আমার কোনো সমস্যা হয়নি।
নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়ন থেকে আসা আবু বক্কর, সাকিব তালুকদার, সুমন খান জানান, নিজের পাসপোর্ট নিজে করতে এসেছি। দালাল ধরে পাসপোর্ট করতে হতো আগে শুনেছি তারা নিয়েছেনও অতিরিক্ত টাকা। বর্তমানে ব্যাংকে ও অনলাইনে আবেদন ছাড়া কোনো টাকা দেওয়া লাগছে না। অল্প দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পেলাম। তবে এই নিয়ম যেন সবসময়ই থাকে সেই দাবি করি।
কাঁঠালিয়া উপজেলা থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করতে আসা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমি মালেশিয়া ছিলাম পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে নবায়ন করতে এসেছি। এখন পাসপোর্ট করা এখন অনেক সহজ। নিজে নিজেই সব করা যায়। কোনো অতিরিক্ত ফি বা দালালের প্রয়োজন হয় না।
পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. তৌহিদ উল আরিফ বলেন, জুলাই আগস্টের পর পাসপোর্ট আবেদনের চেয়ে বিতরণ বেশি চলছে। তবে হিন্দুদের আবেদন বেশি পড়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টা প্রতিমাসে ১১০০ এর অধিক আবেদন পড়ছে। আমরা নিবিড়ভাবে পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করি, যাতে কোনো প্রতারক বা দালাল মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে কোনো ভুল না থাকলে খুব সহজেই যে কেউ পাসপোর্ট করতে পারছেন।