বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠু, কলাপাড়া॥ কলাপাড়ায় বিএনপি নেতা পরিচয়ে দোকান ঘড় ভাংচুরসহ চাষের মাছ চুরি ও লুটতরাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মানছুর ও শাহীন প্যাদার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ইজারা নেয়া খাল থেকে লক্ষাধীক টাকার মাছ চুরিসহ খাল দখলের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, মাছুয়াখালী গ্রামের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত হাকি প্যাদা’র ছেলে শাহীন প্যাদা ও মৃত নোয়াব আলীর ছেলে মানছুর প্যাদার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন এলাকার বাহিরে বসবাস করলেও গত বছরের ৫ আগষ্ট বিগত সরকারের পতনের পর গ্রামে ফিরে মরিয়া হয়ে ওঠেছে ডাকাতিসহ চাঁদাবাজীর একাধিক মামলার আসামী মানছুর ও শাহীন প্যাদা। স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের কোন পদ-পদবী না থাকলেও সেই পরিচয় দিয়েই দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। তাদের দাঁপটে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছে মাছুয়াখালী গ্রামবাসীসহ আশপাশের সাধারন মানুষ। জানা যায়, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে চাঁদার দাবীতে স্থানীয় বাসিন্দা মালেক ভেন্ডার, জয়নাল গাজী, সোয়েব খাঁন, নাসির হাওলাদার ও কবির মৃধাসহ একাধিক মানুষের দোকান ও বাড়ি ঘর ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করেছে মানছুর ও শাহিন প্যাদার বাহিনী।
স্থানীয় সোহাগ মৃধা, শাহিন মৃধা ও শিল্পী বেগমসহ আরো অনেকে জানান, মানছুর ও শাহীন প্যাাদা দীর্ঘদিন পরে দেশে ফিরে জুলুম অত্যাচারের হুলিয়া চালাচ্ছে। একাধিক মানুষের দোকান ও বাড়িঘর ভাঙ্গচুর করেছে। এমনকি মাছুয়াখালী গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহীত মাছুয়াখালী খালটিও তারা জোর পূর্বক দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘ বছর ধরে মাছুয়াখালী খালটি ইজারা নিয়ে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মাছ চাষ করে আসছে। এ খাল থেকে আয়ের একটি অংশ ওই এলাকার আলামিন বাধঘাট জামে মসজিদ, হাজীবাড়ী জামে মসজিদ,শরিফ বাড়ী জামে মসজিদ, হাজী ধলু হাওলাদার বাড়ী জামে মসজিদ, হাওলাদার বাড়ী জামে মসজিদ, মীরাবাড়ী পাঞ্জেখানা মসজিদে দেয়া হয়। যা দিয়ে ওইসব মসজিদের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। অথচ মানছুর ও শাহীন সে খাল থেকে জোর পূর্বক মাছ ধরে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার মাছ চুরি করে বিক্রি করার সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে ফেলে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তারা স্থানীয়দের উপর চড়াও হয়ে ভয়ভীতি ও হুমকী দেয়। ইতোমধ্যে তারা ওই খাল থেকে লক্ষাধীক টাকার মাছ চুরি করেছে বলে তারা জানান।
অভিযুক্ত শাহিন প্যাদা ও মানছুর বলেন, ১৭ বছর খাইতে পারিনাই এজন্য দোকানপাট ভাংচুর করেছি। আমরা চুরি করিনাই। ২নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি মতিউর রহমান গাজী ও সাধারন সম্পাদক অসীম প্যাদা বলেন, মানছুর ও শাহীন স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের কেহ না। কিন্তু তারা বিএনপি’র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছে। তারা আরো বলেন, বিএনপি’র মতো একটি সুসংগঠিত দলে সন্ত্রাসীদের কোন জায়গা নেই। সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক না কেনো দেশের প্রচলিত আইনে তাদের শাস্তি কামনা করেন তারা। চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক মাছুম বিল্লাহ, সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান মিলন ও সহ সাধারন সম্পাদক মো. আলামিন হাওলাদার বলেন, শাহিন ও মানছুর বিএনপির কেউ নয়। ওদের গরু চুরির শালিসিও আমরা করেছি। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি শাহিন প্যদা তার গর্ভধারনী মাকে মারধর করে বাড়ী থেকে নামিয়ে দেয়। বৃদ্ধ মা সাফিয়া বেগম লালুয়ায় তার মেয়ে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি সাধারন সম্পাদক অ্যাড.হাফিজুর রহমান চুন্নু তালুকদার জানান, বিএনপি জনগনের দল। নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলবাজদের স্থান বিএনপিতে নেই। কেউ বিএনপির পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।