আযাদ আলাউদ্দীন।।
বহু সমস্যায় জর্জরিত ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। নতুন প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকেই নিজ কর্মদক্ষতা আর আধুনিক ব্যবস্থাপনার জাদুতে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে আমূল পরিবর্তন এনেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজাহারুল হক। তাঁর নেতৃত্বে বিদ্যালয়টির শিক্ষার মানোন্নয়ন থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখার মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গৃহীত যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো এখন জেলাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই মোঃ আজাহারুল হক উপলব্ধি করেন, একক প্রচেষ্টায় স্কুলের পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই তিনি নিয়মিত শিক্ষক মিলনায়তনে সহকর্মীদের নিয়ে মত বিনিময় সভার আয়োজন করেন। সেখানে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করা হয় এবং সম্মিলিতভাবে সমাধানের পথ খোঁজা হয় এবং সমাধান করা হয়।
বিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটি শিক্ষার্থী পলায়ন। শিক্ষকদের সহেযোগিতা মুলক মনোভাবের কারণে তা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে অনেকাংশে। প্রধান শিক্ষকের কঠোর নির্দেশনায় প্রত্যেক কর্মদিবসে শ্রেণি শিক্ষকেরা এখন শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নজরদারি করেন, যার ফলে বিদ্যালয় থেকে ছাত্রদের পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে। ক্লাসরুমগুলো এখন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মুখর থাকে। সবচেয়ে আনন্দের খবর হলো এবারই প্রথম অভিভাবকরা তাদের সন্তানের পরীক্ষার খাতা স্কুলে বসে দেখার সুযোগ পেয়েছেন। অভিভাবকরা জানান, এ ব্যবস্থাটা অব্যাহত থাকলে আমাদের সন্তানরা খাতায় কতটুকু লিখেছে তার একটা ধারনা জন্মে যা প্রশংসার দাবি রাখে। অন্যদিকে তার সন্তান কতটুকু লিখতে পেরেছে সে ধারনাও পাওয়া যায়। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

শুধু শ্রেণিকক্ষের মধ্যেই তাঁর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকেনি। সম্প্রতি তিনি ‘অভিভাবক সমাবেশ ও মত বিনিময় সভা’ আয়োজন করে এক নতুন বার্তা দিচ্ছেন। এই সভায় অভিভাবকবৃন্দ তাঁদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা বিভিন্ন অভিযোগ ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং সেগুলো সমাধানে তাৎক্ষণিক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। অবৈধ ভর্তি বা পছন্দের শিফটে যাওয়ার মতো কোনো অভিযোগ এখন আর এই বিদ্যালয়ে শোনা যায় না। অভিভাবকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি নতুন শেড নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে, যা তাঁদের দীর্ঘদিনের একটি কষ্টের অবসান ঘটাবে।
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করে প্রধান শিক্ষক মোঃ আজাহারুল হক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাঁর বলিষ্ঠ ও কৌশলী নেতৃত্বে এই প্রথমবার শতভাগ নকলমুক্ত ও সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। বিদ্যালয়ের এই ইতিবাচক পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি আসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীরা অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। সুন্দর ও পরিচ্ছন্নভাবে এসএসসি পরীক্ষায় পরিচালনা করায় ভোলা জেলা প্রশাসক তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা বিদ্যালয়ের ভাবমর্যাদেকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
ছাত্র অভিভাবক হারুন অর রশিদ ও সালমা শারমিন সুরভি বলেন, প্রধান শিক্ষক মোঃ আজাহারুল হকের মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের নেতৃত্ব যদি অব্যাহত থাকে, তবে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতভাবেই বজায় থাকবে। তাঁর গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ বিদ্যালয়ের পাঠোন্নয়নে এক যুগান্তকারী অধ্যায় হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আজাহারুল হক দৈনিক বাংলাদেশ বাণীকে জানান, আমি চাই শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহযোগিতা নিয়ে সম্মিলিতভাবে স্কুলটির হারানো ঔতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এ ক্ষেত্রে কোনো আপোষ নেই। শিক্ষার মান উন্নয়নে শত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমি প্রস্তুত।

Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান হলো
Thanks for the report.
প্রথমেই প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ আজাহারুল হক স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি, তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষার্থীরা আরো ভালো করবে। স্যার এর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।