ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী (বরিশাল)।।
বরিশালের মুলাদী উপজেলায় এ বছরই প্রথম উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে নতুন জাতের “ঈশ্বরদী-৩৯” আখ চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সংযোজন হয়েছে। মুলাদী উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে বলরামপুর ব্লকে চরপৈক্ষা গ্রামে নয়া ভাঙ্গনি নদীর ধারে বহুবছর ধরে আখ চাষ হয়ে আসছে কিন্তু স্থানীয় জাত চাষ করায় প্রতি বছরই আখের লাল পঁচা রোগে এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় এর ফলে দিন দিন আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছিল চাষিরা। বিষয়টি কৃষি বিভাগের নজরে আসলে সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চাষিদের নিয়ে তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি কর্মকতা মোঃ মনিরুল ইসলামের সহায়তায় আঞ্চলিক ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে “ঈশ্বরদী -৩৯” জাতের আখের চারা ও সার দেওয়া হয়।
“ঈশ্বরদী-৩৯” এই জাতটি উচ্চ ফলনশীল ও আগাম পরিপক্ক জাত। আখে চিনির পরিমাণ (১৪.২৩) স্থানীয় জাতের তুলনায় প্রায় দিগুণ। এছাড়াও এ জাতটি লালপঁচা রোগ প্রতিরোধী। উন্নত মানের গুড় তৈরী হয়। আখের চোখ মধ্যম ডিম্বাকৃতির। কান্ড শক্ত, ভেতরে ফাঁপা নেই, পুষ্পক, আগাম জাত। বন্যা, খরা, জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু। চরাঞ্চলের জন্য উপযুক্ত। গাছে পাতার খোলে হুল দেখা যায় না। ইতিমধ্যে চাষিরা “ঈশ্বরদী-৩৯” জাতের আখ চাষ করে সফলতা পেয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার জাতটির সম্পর্কে বলেন, নতুন এই জাতের আখ মাঠে ব্যাপক ভাবে আবাদ করা হলে দেশের চিনিকলগুলোয় চিনির উৎপাদন বেশী হয়ে লোকশানের মাত্রা অনেকাংশেই কমে যাবে।
এই প্রথম আখ চাষী মেঃ রফিকুল ইসলাম ৩৩ শতাংশ জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় “ঈশ্বরদী-৩৯” আখ চাষ শুরু করেছে। “ঈশ্বরদী-৩৯” আখের সার্বক্ষণিক তদারকি করেন উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রাহাদুজ্জামান।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার ব্যাক্তিগত একটি ইচ্ছে হচ্ছে মুলাদী উপজেলায় নতুন ফসল অথবা নতুন জাত সম্প্রসারণ করার, এর ধারাবাহিকতায় আমরা কৃষকদের উদ্ভুদ্দকরনের মাধ্যমে, বীজ সহায়তা দিয়ে “ঈশ্বরদী-৩৯” জাতের আখ চাষের উৎসাহ সৃষ্টি করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন, এখন সময় কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মুলাদীতে আরো নতুন জাতের আখ ও ফসল চাষ হবে। চাষির শ্রম বিফলে যাবে না। মুখে কৃষকের ফুটবে হাসি। নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।