নিজস্ব প্রতিবেদক॥
বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসানের দখলকৃত জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সড়কের দুই কিলোমিটার এলাকায় অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে রূপাতলী গোলচত্বর থেকে সাগরদী ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলোর উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেয়াল সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৩০টি অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। দিনব্যাপী এই অভিযান নগরের রূপাতলী থেকে দপদপিয়া ও কালিজিরা পর্যন্ত চলতে থাকে। তবে কালিজিরা বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া জানা গেছে, বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত সড়কের দুপাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি লিজ নেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা বেশ কয়েক বছর ধরে তা নবায়ন করেননি এবং অনেকেই অবৈধভাবে জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা গড়ে তুলেছিলেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, এই জমি উদ্ধার করতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
এদিকে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় গড়ে ওঠা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা অনেকেই বৈধ কাগজপত্র থাকার দাবি করেছেন। রূপাতলী এলাকার সমাজসেবা কার্যালয়ের সামনে গড়ে ওঠা একটি মার্কেটের দোকান মালিকরা জানায়, তারা গত সরকারের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে টাকা অগ্রিম নিয়ে দোকানগুলো নিয়েছিলেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই অঞ্চলে একাধিক উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তাদের দোকান ভাঙা হয়নি। তবে এবার এসব স্থাপনাগুলো অবৈধ ঘোষণা করে উচ্ছেদ করা হয়েছে, যার ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের জীবিকার একমাত্র ভরসাস্থল হারিয়ে দিশেহারা। এ জন্য তারা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।
নগরবাসীর মধ্যে অনেকেই বলছেন, বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ঝালকাঠি- পিরোজপুর সড়কের রূপাতলী অংশটির মহাসড়ক সরু হওয়ায়, যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হয়। যদিও আগের সরকারের সময় মহাসড়কটি দুই থেকে চার লেনে উন্নীত করার জন্য একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের মাধ্যমে সড়ক প্রশস্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অভিযানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সহায়তা করেছে। বুলডোজারের সাহায্যে প্রায় দুই শতাধিক ছোট-বড় দোকানপাট ও পাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।