তিনি জানিয়েছেন, মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নিহত আছমা আক্তারের বোন মোর্শেদা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা।
নিহত গৃহবধূ আছমা আক্তার গলাচিপা উপজেলার গ্রামদ্দন পানপট্রি গ্রামের হানিফ খানের সৌদী প্রবাসী ছেলে শাহিন খানের স্ত্রী। তার বোন মোর্শেদা রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের চান মিয়ার স্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১২ সালে তার ছোট বোন আছমা আক্তারের বিয়ে হয় শাহিন খানের সাথে। এরপর সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। তাদের সংসারে ১ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। ২০২০ সালে শাহিন খানকে বিদেশ পাঠাতে টাকার জন্য আছমার ওপর শ্বশুর হানিফ খান, শাশুড়ি নুরজাহান, ননদ মমতাজ, চাচা শ্বশুর শাহ আলম খাঁ, চাচা শ্বশুর মোস্তফা খাঁ ও চাচী শাশুড়ি মাজেদা বেগমসহ অন্যান্যরা চাপ সৃষ্টি করে। তখন আছমার ভাই-বোনসহ পরিবারের সবাই মিলে শাহিনের বাবা হানিফ খানকে নগদ ৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে শাহিন খান সৌদি আরব যান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এর পর থেকেই বিভিন্ন অযুহাতে আমার ভগ্নিপতি শাহিন খাঁ, তার বাবা-মা, বোন এবং চাচাদের কু পরামর্শে আছমার সাথে মোবাইলে ভালোভাবে কথা না বলে উল্টো মানষিক চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিনিয়ত ঝগড়া ফ্যাসাদের কারণে সংসারে অশান্তি লেগে থাকে।এমনকি আমাদের বাড়ি থেকে আরো টাকা এনে দিতে বলে শ্বশুর-শাশুড়ি এবং ননদসহ অন্যান্যরা বোনকে মারধর করত।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর আমার গ্রামের প্রতিবেশী আশরাফ বিশ্বাস জানান আমার ছোট বোন আছমা গলায় ফাঁস দিয়েছে। খবর পেয়ে সন্ধার পরে বোনের বাড়িতে পৌঁছাই। তখন মৃতদেহ গলাচিপায় থানায় ছিল। এ বিষয়ে আমার বোনের শ্বশুর হানিফ খাঁ একটি অপমৃত্যু মামলা করে।
পরে বিভিন্ন সূত্র ও ঘটনা স্থল দেখে আমি বুঝতে পারি আমার বোন অছমাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয় তার শ্বশুর-শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের লোকেরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় আমি একই বছরের ৮ নভেম্বর গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করি। মামলা নস্বর ৯৭৯/২০২৩। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান গলাচিপা থানার উপ-পরিদর্শক মাহতাব হোসেন। তিনি আসামি পক্ষের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে আসামিদের পক্ষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। যার কথোপকথোনের কল রেকর্ড আছে।
আমি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে নারাজি দিলে আদালত পিবিআইকে মামলাটি পুন.তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো তারাও আসামি পক্ষে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। সেই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পনরায় নারাজি দিলে আদালত তা গ্রহণ করে সিআইডিকে মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে সিআইডির পরিদর্শক বিপ্লব মিস্ত্রী মামলাটি তদন্ত করছেন। সিআইডিতে মামলাটির যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে নিহতের বোনসহ পরিবারের সদস্যরা।