বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
BOSIR

ধানখালী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থবাণিজ্যসহ বিস্তর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়া ‘ধানখালী ডিগ্রি কলেজে’র অধ্যক্ষ মো. বশির আহমেদ- এর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষক নিয়োগে অর্থবাণিজ্য ও কলেজকে আওয়ামীকরণ করাসহ বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কর্মকান্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য ঢাকা শিক্ষা ভবনের পরিদর্শণ ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে আবেদন দেওয়া হয়েছে। এদিকে, অধ্যক্ষ বশির আহমেদ- এর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ ও তাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় মানবন্ধনে কিছু লোক সন্ত্রাসী কায়দায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করে।

‘ধানখালী ডিগ্রি কলেজে’র প্রতিষ্ঠাকালীন জমিদাতা মো. বায়েজিদ আহমেদ- এর দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বশির আহমেদ পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববরের আমলে নিয়োগ পান। নিয়োগের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাকরি বিধি উপেক্ষা করে অপরাধসহূহ সংগঠিত করেন।

অভিযোগে তিনি লিখেছেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় তার বাবা তোফায়েল আহমেদ, তার প্রয়াত চাচা আবদুল আজিজ সিকদার ও নাজেম আহমেদ সিকদারের মোট ৫০ শতাংশ জমি সরকার অধিগ্রহণ করে সরকার। জমির অধিগ্রহণের বিনিময়ে সরকারের দেওয়া ১৪ লাখ (১৪০০০০০) টাকাও আত্মসাত করেছেন অধ্যক্ষ বশির। কলেজের অসংখ্য গাছ ও মাছ বিক্রির টাকাও খেয়েছেন তিনি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। ডিগ্রি পর্যায়ে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে উতকোচ নিয়েও তাদের চাকরি এমপিও ভূক্তি করেননি। তিনি স্টুডেন্ট ভর্তি, ফরম ফিলাপ, দোকান ভাড়ার অর্থ আত্মসাত করেছেন।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে, কলেজের বাসা ভাড়া, ডরমেটরি ভাড়া দিয়ে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ। এছাড়াও কলেজের উন্নয়নমূলক কাজের নামে ভুয়া ভাউচার করে সরকারি টাকা আত্মসাত করেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি হয়েও আওয়ামী লীগের দলীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। কলেজের নিরপেক্ষ শিক্ষক হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করার কারণে একজন জমিদাতার সন্তান হওয়ার পরও তাকে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বায়েজিদ আহমেদ।

এখানেই শেষ নয়, অধ্যক্ষ বশির দুর্নীতি করেছেন অন্য প্রতিষ্ঠানেও। ক্ষমতার দাপটে তিনি কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নে পূব মধুখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হন। এ সময় তিনি নানা আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যহার করেন। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়াও মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নে পূর্ব মধুখালী সালিহা দাখিল মাদরাসায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগ দেন। কথিত আছে এসব নিয়োগের পেছনেও ছিল অর্থবাণিজ্য। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- সুপারিনটেনডেন্ট, একজন লাইব্রেরিয়ান, একজন নিরাপত্তা প্রহরী (তার আপন ভাই) ও একজন আয়া।

উল্লেখিত অনিয়মের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের পর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। আর এই তদন্ত চলাকালীন সময় যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে এজন্য অধ্যক্ষ বশির আহমেদকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে সহকারি প্রভাষক মো. আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর অধ্যক্ষ বশিরের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও অধ্যক্ষের পদ থেকে তাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় কিছু লোক সন্ত্রাসী কায়দায় বাধা দেয়। সকল বাধা উপেক্ষা করে মানববন্ধন চালিয়ে যায় প্রতিবাদকারীরা।

আরো পড়ুন

আগৈলঝাড়ায় বিপ্লবী ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা

আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি‍॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাসাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে  ৭ই নভেম্বর জাতীয় ঐতিহাসিক বিপ্লব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *