বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনব্যাপী গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন জনবহুল স্থানে, যেমন বাংলাস্কুল মোড়, কে জাহান মার্কেট, মাহজান পট্টি, এবং চকবাজারে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের মাঝে জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্রের লিফলেট বিতরণ করেন, পাশাপাশি আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
এরপর তিনি ভোলা সদরের ইলিশ চত্বরে আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “আমরা ভোলাবাসীর সকল দাবিগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেব। যে ভোলায় গ্যাস উৎপাদন হয়, সেখানে ভোলার মানুষ কেন গ্যাস পাবে না? যে ভোলা থেকে মুমূর্ষু রোগী বরিশাল যেতে যেতে মারা যায়, সেখানে কেন মেডিকেল হাসপাতাল হবে না? কেন ভোলা-বরিশাল সেতু হবে না?”
তিনি আরও বলেন, “ভোলা বীরের জেলা। এ জেলার শহীদরা তাদের জীবন দিয়ে এ আন্দোলন সফল করেছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সকল শ্রেণি, ধর্ম ও দলমতের মানুষ লড়াই করেছি। আমরা গত ১৬ বছরে দেখেছি, যখনই ভোটের প্রয়োজন ছিল, তখন কিছু মানুষ জনগণের কাছে এসে জননেতা সেজে কথা বলেছে, কিন্তু খুনি হাসিনা গত ১৬ বছরে এমনভাবে জনগণ থেকে দূরে চলে গেছেন যে ভোটের প্রয়োজনও দেখেননি।”
সারজিস আলম বলেন, “আমরা যে আন্দোলনে জীবন দিয়েছি, সেই আন্দোলনের স্পিরিটকে সামনে রেখে, বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের যে স্বপ্ন রয়েছে, তা যেন ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়। ঘোষণাপত্রে যা থাকবে তা যেন কেবল কিছু মানুষের কথা না হয়ে, প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা হয়।”
পথসভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, “এ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার যে মিশেল আমরা দেখেছি, তা গত ১৫ বছরের বেদনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার সম্মিলন। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে। আমরা চাই আমাদের দেশের তরুণরা পার্লামেন্টে আসুক। ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তাদের একটি সেলফ সিকিউরিটি নিশ্চিত করা সম্ভব।” তিনি শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান এবং অভ্যুত্থানের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে সারজিস আলম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা ৪ আগস্ট ভোলায় নিহত শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান এবং তার কবর জিয়ারত করেন।
পরবর্তীতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে “জুলাইয়ের প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা” স্লোগানে সাতটি বিষয় ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে, ভোলা জেলা শহরের বাংলাস্কুলের সামনে থেকে লিফলেট বিতরণ শুরু করেন এবং সাধারণ মানুষের মতামত শোনেন।
এরপর সারজিস আলম ভোলার বোরহানউদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশনে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।