বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৫

কী পেলো শহিদ মনির ও তার পরিবার!

এরশাদ সোহেল, বিশেষ প্রতিবেদক :

দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা আর মমত্ববোধের টানে নিজের করা ঝুট কাপড়ের ব্যবসা রেখে দেশ রক্ষার জন্য ছুটে গেছেন ৫ আগস্টের ছাত্র জনতার আন্দোলনে, আর ফিরেছেন নিথর লাশ হয়ে। পেয়েছেন শহিদের তকমা,দেশ ও ফিরে পেয়েছে তাঁর অবাধ স্বাধীনতাকে। তবে কান্নার আহাজারি এখনো থামেনি শহিদ মনিরের পরিবারে। বর্তমানে শহিদ মনিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম ঋণের বোঝা মাথায় করে ছোট্ট দুই শিশু জুনা(৫),আবির(১০) এর ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন অতিবাহিত করছেন ।

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার একমাত্র শহিদ মো:মনির উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের দ:শম্ভুপুর গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের আরফত আলী দফাদার বাড়ির আ:মন্নান ও সাজেদা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে ছিলেন সবার বড়।

জীবিকার টানে বড় ছেলেকে সাথে নিয়ে বাবা আ:মন্নান পাড়ি জমান ঢাকায়। শুরু করেন ঝুট কাপড়ের ব্যবসা। মনিরের বাবা আ:মন্নান মিয়া জানান, এক সময় মনির ইসলামপুর, সুরিটোলায় একই ব্যবসা শুরু করেছেন,আর থাকতেন বংশাল এলাকায়। সেদিন, অর্থাৎ ৫ আগস্ট ব্যবসায়িক কাজে না গিয়ে মেস এ থাকা কয়েকজন মিলে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। দুপুরের দিকে শাহবাগে পুলিশের গুলিতে আহত হলে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করানো হয় তাকে। রাত দুইটায় পাশের বেডে থাকা লোকজনের কাছ থেকে মোবাইলে মনিরের মৃত্যু সংবাদ পান বলে জানান তিনি।

শহিদ মনিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম বলেন,ছাত্রজনতার আন্দোলনে ঢাকার শাহবাগে মনিরের পেটে পুলিশের গুলি লাগে। এরপর আমরা রাত তিনটার মনিরের মৃত্যু সংবাদ পাই। প্রথমে ভয়ে আত্মীয় স্বজনের কেউই লাশ আনতে যেতে চাননি। পরবর্তীতে ছাত্রদের সহযোগিতায় ৬ আগস্ট তারিখ সকালে লাশ গ্রহণ করে বাড়িতে এনে দাফন করার কথা জানান তিনি। শহিদ মনিরের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ,স্থানীয় জামায়াত ইসলামী’র পক্ষ থেকে দু’লাখ,বিএনপি’র পক্ষ থেকে পঞ্চাশ হাজার, শিল্পকলা একাডেমি থেকে দশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ টাকা থেকে মনিরের বাবাকে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা এবং বাকিটা মনিরের স্ত্রী সন্তানদের জন্য রাখা হয়। সেখান থেকে কিছু টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করেন, বাকিটা সন্তানদের জন্য রেখে দেওয়া হয়। এ টাকায় খুব বেশিদিন চলতে পারবেন না বলে কান্নাজড়িত কন্ঠে হতাশা প্রকাশ করে রোজিনা বেগম আরো বলেন,বর্তমানে বেসরকারি এনজিও ব্রাক থেকে এক লক্ষ  টাকা এবং স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে ধার-দেনা বাবদ অনেক ঋণে জর্জরিত। এরমধ্যে ব্রাকের একলক্ষ টাকার এখনো ষাট হাজার টাকা পাবেন এবং সেই টাকার জন্য ব্রাক থেকে অনেক চাপ আসছে বলে জানান তিনি। সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দশ হাজার টাকা পেয়েছেন বলে জানান এবং সরকারের কাছে সহযোগিতার দাবী জানান।

তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভ দেবনাথের কাছে জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করেছেন এবং পরবর্তীতে আরো সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

আরো পড়ুন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক ।। বর্ণিল আয়োজনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার উদযাপন করেছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। নতুন বছরকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *