বুধবার, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
tree
tree

বানারীপাড়ায় চুরি হওয়ায় কমছে খেজুরের রস সংগ্রহ

বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥

দিন বদলে যায়, রাত আসে, আবার রাত পেরিয়ে দিন ফিরে আসে। এভাবেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা, ফলে খেজুর রস সংগ্রহেও দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। তবে কিছু মানুষ এখনও ঐতিহ্য ধরে রাখতে বেঁচে থাকা গাছগুলো থেকে রস সংগ্রহ করছেন, কিন্তু তা সহজ নয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাছ থেকে রস চুরি হচ্ছে, যা সরবরাহে সমস্যা সৃষ্টি করছে।

বরিশালে খেজুর গাছ কমে যাওয়ার মূল কারণ ইটভাটা। গাছিরা বলছেন, ইটভাটা বাড়ানোর কারণে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পরিমাণ কমে গেছে। এছাড়া হাড়ি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দামও বেড়েছে।

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠী এলাকার আলী হাওলাদার (৫৫) জানান, তিনি তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। এক সময় গাছ থেকে প্রচুর রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করা হতো বা গুড় বানানো হতো, কিন্তু এখন গাছ কমে যাওয়ায় রস সংগ্রহের পরিমাণও কমেছে। তাই এখন গুর বানানোর পরিবর্তে বাজারে রস বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এক সময় এক বাড়ি থেকেই ২০-৩০ লিটার রস পাওয়া যেত, কিন্তু এখন পাঁচটি বাড়ি ঘুরলেও মাত্র ২০টি গাছ পাওয়া যায় না। গাছ মালিকদের কাছ থেকেও শ্রমের মজুরি মেলা কঠিন হয়ে পড়েছে। ইটভাটার কারণে খেজুর গাছের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এবং নতুন কোনো খেজুর গাছ রোপণেও আগ্রহ নেই।

 

তবে শুধু গাছের অভাব নয়, চুরি ও হাড়ি সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি এবং রস সংগ্রহে অরুচি সৃষ্টি হয়েছে। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার গাছি আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, তিনি ২০-২৫ বছর ধরে খেজুর গাছ বাছাই করে রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেন, কিন্তু এখন খেজুর গাছ নেই এবং রস চুরি হওয়ায় কেউ তেমন আগ্রহী নয়। সড়কের পাশের গাছ থেকে রস চুরি হয়ে যায়, ফলে গাছির আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আগে রসের হাঁড়ি প্রতি রস বিক্রি হলেও এখন লিটার প্রতি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। রসের মূল্য কমে যাওয়ায় গুড় তৈরি কমে গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাঁচা রস লিটার প্রতি বিক্রি হয়। তবে কাঁচা রসের চাহিদা এখনও বেশ, কারণ শীতকালে রসে ভেজানো পিঠার কদর অনেক বেশি।

গ্রামের সাধারণ মানুষেরাও জানাচ্ছেন, খেজুর রস সংগ্রহ কমে গেছে। বরিশাল শহরতলীর বাসিন্দা সীমা বেগম বলেন, ছোটবেলায় শীতের সময় বাড়ির উঠানে চাচারা রসের হাঁড়ি গাছ থেকে নামিয়ে এক জায়গায় রেখে রস ছেঁকে তাদের খেতে দিতেন। তবে এখন খেজুর রস খেতে হলে দুই দিন আগে স্থানীয় হাটে খোঁজ রাখতে হয় এবং সেগুলো কিনে এনে রসের পিঠা তৈরি করতে হয়। তবে নিপা ভাইরাসের কারণে কাঁচা রস এখন আর সেভাবে খাওয়া যায় না।

আরো পড়ুন

gournadi

গৌরনদীতে ”তারুন্যের উৎসব“ উপলক্ষে  পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

গৌরনদী প্রতিনিধি‍॥ তারুন্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে গৌরনদী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পিঠা উৎসব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *