বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
ইটভাটাগুলোতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও, এখনও অনেক ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কয়লার পরিবর্তে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে গাছের গুঁড়ি, কাঠ ও লাকড়ি। এর ফলে পরিবেশের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চলছে। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মেসার্স আবির ব্রিকসের মো. রিপন হোসেন বলেন, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর খরচ বেশি, কিন্তু গাছের গুঁড়ি, কাঠ ও লাকড়ি দিয়ে খরচ অনেক কম হয়। তাই অনেক ভাটা মালিক কয়লা ব্যবহার না করে গাছ পুড়িয়ে ইট পোড়ানোর কাজ করছেন।
তবে অনেক ভাটা মালিকের দাবি, বর্তমানে কয়লার আমদানিতে সংকটের কারণে তারা গাছের দিকে ঝুঁকছেন। যদি নিয়মিত কয়লার সরবরাহ থাকতো, তবে তারা সরকারি নির্দেশনা মেনে কয়লা ব্যবহার করতেন।
হিজলা উপজেলার ইটভাটা মালিক আকতার প্যাদা বলেন, কয়লা কিনতে হলে একসঙ্গে ৫০-৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন, যা অনেক ভাটা মালিকের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। এছাড়া কয়লা আনতে প্রচুর ঝামেলা হয়, কিন্তু গাছ সহজেই ভাটায় এসে দেওয়া যায়। এসব কারণে ইটভাটা মালিকরা কয়লা পরিবর্তে গাছের গুঁড়ি, কাঠ ও লাকড়ি ব্যবহার করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইটভাটা মালিক জানান, গাছ পুড়িয়ে ইটভাটা পরিচালনায় প্রশাসনিক ঝামেলা থাকে, তবে সবকিছু ম্যানেজ করা সম্ভব। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে এই সমস্যা বাড়ছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, বরিশালে বর্তমানে ২৭০টি ইটভাটা রয়েছে, যার মধ্যে ১২০টি বৈধ, বাকিগুলো অবৈধ। এসব ভাটায় গাছ ও কাঠ পোড়ানো বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।
বরিশাল পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক লিংকন বায়েন বলেন, “ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো একদম নিষিদ্ধ। তবে গত আগস্ট থেকে কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এসব বিষয়ে কঠোরভাবে তদারকি সম্ভব হচ্ছে না। তবে, স্থায়ীভাবে কাঠ পোড়ানো হলে বন উজাড় হয়ে যাবে, তাই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কয়লা আমদানির জটিলতা দূর করতে উদ্যোগ নিতে হবে।”