কাজী সোহাগ, নলছিটি
নলছিটির হয়বাতপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ঐশি আক্তারের বিরুদ্ধে নবজাতককে নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনার পর থেকে এখনো নবজাতককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ওই নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদের অভিযোগ, ৫ দিনের এক নবজাতককে আবদুর রব সেরনিয়াত সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দিয়েছে স্কুল শিক্ষিকা ঐশি আক্তার।
এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষন্নতার কারণ দেখিয়ে অভিযুক্ত মা ঐশি আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্টারে কৌশল করে তার নাম রাবেয়া লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৭টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
জানা যায়, নবজাতকের মা ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। ঐশি আক্তারের স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।
নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর দুইদিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে আসি। সেখান থেকে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। এরপর সে অটোরিকশাযোগে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে আমার সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমি আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষন্নতায় ভুগছেন। এজন্য তাকে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে-এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না।
হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালের কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়। এরপর সোমবার (১৩ জানুয়ারি) স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু নবজাতককে তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছে থেকে পরিস্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।’