এরশাদ সোহেল, নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ ভাষা শহিদদের নিয়ে এমন প্রবাদ বাক্য এবং সঙ্গীতের কোনো কমতি না থাকলেও শহিদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা ভুলতে বসেছে মায়ের ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী শহিদদেরকে,ভুলে গেছে ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস।রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ১২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে নেই কোনো শহীদ মিনার। এতে করে এই অঞ্চলের কোমলমতি শিশু ও তরুণ ছাত্র ছাত্রীরা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি এলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাঁশ আর কলা গাছ দিয়ে একটি শহীদ মিনার তৈরি করে আর তা দিয়েই ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৯টিতেই নেই কোনো শহিদ মিনার। এরমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০ টি এবং সরকারী, এমপিওভুক্ত স্কুল -কলেজ এবং মাদ্রাসা মিলিয়ে ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,তারা শুধু মাত্র পাঠ্যবইয়ের ভাষা আন্দোলনের পাঠ্যাংশ্যটুকু পাঠদানের সময় কেবল ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারেন। শহীদ মিনার না থাকায় প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস এবং শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার প্রত্যন্ত এলাকার অনেক শিক্ষার্থী ভাষা আন্দোলন ও শহীদ দিবস সম্পর্কে জানেনইনা বলে জানা যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জুয়েল বলেন, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীদেরকে ভাষাশহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে শহীদ মিনার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা কামনা করেন তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনায়েতুর রহমান বলেন,শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রয়োজন। তাই যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার এখনো নির্মাণ করা হয়নি,এ বছর সেই সব প্রতিষ্ঠানে পিইডিপি-৫ প্রকল্পের আওতায় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.রেজাউল করিম বলেন,শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি কোনও তহবিল নেই। তবে ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ মর্যাদা দিতে হলে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি।