বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় ৩০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) দিনগত রাতে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় এ মামলা করেন মহানগর গণঅধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম সাগর। রোববার (০১ জুন) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। মিছিল চলাকালে প্রধান উপদেষ্টাসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের নিয়ে কটুক্তিমূলক স্লোগান না দিতে অনুরোধ করার পর জাপা নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এসময় অভিযুক্তরা হত্যার উদ্দেশ্য হামলা ও গুলি চালিয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার এজহারে বলা হয়, জাপা নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের উপর রামদা, চাপাতি, পিস্তল, লোহার রড, বাশ, ইট নিয়ে হামলা ও গুলি চালায়।
মামলায় আসামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, সাইদুল ইসলাম ট্যাপা, রুহুল আমিন হাওলাদার, রতœা আমিন, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলাম মাহমুদ, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, একেএম সেলিম ওসমান, আশরাফুজ্জামান আশু, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম জিন্না, এমএ জলিল, মহসিন উল ইসলাম হাবুল, মো. জুম্মান, মুফতি আল মাহিদ ও মাহমুদ সোহেলসহ ৩০ জন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর ফকির বাড়ি রোডের মুখে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে চা পান করছিলাম। এসময় জাতীয় পার্টির অফিস থেকে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অন্যান্য উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্যসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কটুক্তিমূলক ও সরকারের সমালোচনা করে স্লোগান দেয় জাপা নেতাকর্মীরা। তখন আমরা জাপার নেতাকর্মীদের সরকার বিরোধী স্লোগান না দেয়ার অনুরোধ করি। এরপর জাপা নেতাকর্মীসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদের উপর রামদা, চাপাতি, পিস্তল, লোহার রড, বাশ, ইট নিয়ে হামলা ও গুলি চালায়। তাদের মারপিটে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ৬ নেতাসহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়।
এ বিষয়ে রোববার বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বরিশাল নগর জাপার আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, একদল টোকাই শ্রেণির যুবক তাদের মিছিল হামলা ও অফিসে ভাংচুর চালিয়েছে। এতে ৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মতাদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম, তাহলে কেন আমাদের ওপর হামলা হলো? প্রশাসনের কাছে আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছি।
প্রসঙ্গতঃ শনিবার বিকালে জাপা চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা-ভাংচুরের প্রতিবাদে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল ফকির বাড়ি রোডের মুখে পৌঁছালে একদল যুবক লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে বলে অভিযোগ। তখন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুই পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় হামলার অভিযোগে জাপা নেতাকর্মীরা একযুবককে গণধোলাই দিলে পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর শনিবার রাত পৌঁনে নয়টার দিকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী নানা স্লোগান দিয়ে একদল যুবক নগরীতে মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফকির বাড়ি রোডে জাপার জেলা ও মহানগর কার্যালয় ভেঙে ফেলে তারা।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।