শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

সন্তানের আকুতি থাকলেও স্বামী সন্তানের কাছে ফিরবেনা পরকীয়ায় আসক্ত ৬ সন্তানের জননী

ভোলা জেলা প্রতিনিধি।।

ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে উধাও হয়েছে ৬ সন্তানের জননী। ওই নারীর স্বামীর অভিযোগ, ইউএনও’র অফিস সহকারি সোহাগ হাওলাদারের সহযোগীতায় মুরাদ হাওলাদার তার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় ২৫ জুন স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি বাদী হয়ে স্ত্রীর সন্ধান চেয়ে চরফ্যাশন থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। পরে শুক্রবার দুপুরে ছেলে ইয়াছিন বাদী হয়ে মাকে ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ওসি চরফ্যাশন থানাকে নির্দেশ দেন। চরফ্যাশন থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে গতকাল রবিবার ৬ সন্তানের জননীকে উদ্বার করে থানায় আনা হয়। তবে চরফ্যাশন থানার ওসি জানান, পুলিশ উদ্ধার করেনি ওই নারী নিজেই ৩সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় এসেছেন। পরকিয়া প্রেমিক মুরাদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। সে আগের স্বামীকে তালাক দিয়েছে। বিয়ের প্রমানপত্র দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, প্রমান পত্র দেখাতে পারেনি বলেছে একমাস পর দেখাবে।

এদিকে স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি চরফ্যাশন ফ্যাশন স্কয়ারে সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন তিনি এবিষয়ে থানায় মামলা করতে চেয়েছেন। চরফ্যাশন থানার ওসি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে আমার মামলা না নিয়ে আমাকে গ্রাম আদালতে মামলা করতে বলেছেন। তিনি বলেন আপনার ৬ সন্তানের মধ্যে তিন সন্তান তারা ( স্ত্রী আয়শা ও পরকীয় প্রেমিক মুরাদ) নিয়ে যাক আর তিন সন্তান আপনি নিয়ে যান।

স্বামী ইয়াকুব মিস্ত্রি সংবাদকর্মীদের কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ১৯বছর সংসার জীবনে তাকে নিয়ে সুখের সংসার গড়েছি। তার কোন ইচ্ছা অপুর্ন রাখিনি। আমি তাকে বিশ্বাস করে টাকা পয়সা স্বর্নালংকারসহ পুরো সংসার তার হাতে দিয়েছি। কখনো ভাবিনি আমার সংসার এবং সন্তানদের ভবিষ্যত নষ্ট করে ইউএনও অফিসের সোহাগের সহযোগীতায় মুরাদের হাত ধরে সে এভাবে চলে যাবে! আমি আমার সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তাদের দ্বিতীয় পুত্র ইয়াছিন জানান, আমার বাবার সাথে আমার মায়ের কখনো কোন ঝগড়া হয়নি। ইউএনও অফিসের সোহাগ ও মুরাদ প্রতিদিন রাতে আমাদের বাসায় যেতো। সোহাগ আমার মাকে মুরাদের প্রতি লোভনীয় অফার স্বর্নালংকার ও টাকা পয়সা এবং সুন্দর ঘর করে দিবে বলে লোভ দেখাতো। আমার বাবাকে সহজ সরল পেয়ে মাকে ভাগাইয়া নিয়া গেছে। এখন আমরা আমার মাকে চাই।

ইয়াকুব মিস্ত্রির স্ত্রী আয়েশা থানায় সংবাদকর্মীদের বলেন, আমি আমার স্বামীর কাছে ভালো ছিলাম না একারণে প্রেমিক মুরাদের সঙ্গে গিয়েছি। মুরাদের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। আইনি আশ্রয়ের জন্য থানায় এসেছি।

অভিযুক্ত মুরাদ হাওলাদার আত্মগোপনে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের অফিস সহকারি মো. সোহাগ জানান, এঘটনায় তিনি জড়িত নন।

চরফ্যাশন থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান হাওলাদার মুঠো ফোনে জানান, আমরা তাকে উদ্ধার করিনি। ওই নারী নিজ ইচ্ছায় থানায় এসেছে এবং সে পুর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে মুরাদকে বিয়ে করেছে। বিয়ের প্রমানাদি এক মাস পর দেখাবে বলেছে। টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে পুর্বের স্বামীর মামলা না নিয়ে তিন সন্তান বাবাকে এবং তিন সন্তান মাকে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। এঘটনায় ইউএনও’র অফিস সহকারি সোহাগ জড়িত কি না এবিষয়ে আমরা ওই নারীকে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি আর ওই নারীও আমাদের কাছে তার বিষয়ে কিছু বলেনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, ৬সন্তানের জননী উধাও’র বিষয়ে আমার অফিস সহকারি সোহাগ হাওলাদারকে জড়িয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি মিমাংসার জন্য চরফ্যাশন থানার ওসিকে দায়িত্ব দিয়েছি।

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *