মনজুর মোর্শেদ তুহিন পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
গত বছর ৩আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপক্ষে সরাসরি মিছিলে অংশ নেওয়া ও ভাইরাল স্লোগানদাতা হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত সরকারি কর্মকর্তা ডা. খালেদুর রহমান মিয়ার আয়োজনে অংশ নিয়েছেন পটুয়াখালীর জুলাই যোদ্ধারা। ফলে পটুয়াখালীর রাজনৈতিক ও সচেতন মহলে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া।
২৮জুলাই (সোমবার) সকাল ১০টা ৩০মিনিটে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় “জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ ও আলোচনা সভা”। আয়োজক ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. খালেদুর রহমান মিয়া। কিন্তু এই আয়োজনের পেছনের ইতিহাসই এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
গত বছরের ৩আগস্ট ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতা বিরোধী মিছিলে অংশ নিয়ে “এক দফা কবর দে” স্লোগান দেন ডা. খালেদুর রহমান মিয়া। এমন ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে মিছিল করছেন। এই ভিডিও প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা এবং নাগরিক সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে। ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর তিনি পটুয়াখালীতে সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন, যা নিয়েও তীব্র বিতর্ক হয়। তার ছাত্র-জনতা বিরোধী সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত একটি নিউজ ২৬জুলাই জাতীয়, আঞ্চলিক, স্থানীয় ও বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে স্থানীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্র জনতার মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
চলতি সময়ে বিতর্কিত ওই কর্মকর্তা নিজেকে ‘সততার প্রতীক’ ও ‘জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধা’ হিসেবে প্রচার করছেন, তার আয়োজনে জুলাই আন্দোলনের অগ্রসৈনিকদের অংশগ্রহণ অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত লেগেছে। আন্দোলনের নৈতিকতা ও স্মৃতি রক্ষার প্রশ্নে এ অংশগ্রহণকে “আদর্শচ্যুতি” হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন অনেকে।
জুলাই যোদ্ধা তোফাজ্জেল বলেন, সিভিল সার্জন এর অফিসে নাকি কয়টা নিয়োগ এজন্য নাকি তার বিরুদ্ধে লাগা হইছে। সে যেদিন সে প্রথম জয়েন করছে তারপরই এই ভিডিওটা আমি দেখছি। এটা তো শুধু আমার কাছে না এটা পটুয়াখালীর ম্যাক্সিমাম সাংবাদিক বা কম বেশি যারা আছে সবাই দেখছে। এখন নিয়োগের সময়ে এই বিষয়টা সামনে আসছে। এ বিষয়ে আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সিভিল সার্জনকে খালি খালি ধরে লাভ নাই। উনি তো শুধু মিছিলে নামছে এর চেয়ে বড় অপরাধীও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তাকে নিয়ে আমাদের কোন প্রতিক্রিয়া নাই।
আরেক জুলাই যোদ্ধা সালমান বলেন, আসলে এ ব্যপারে আমি শুনেছি। কি করা যায় সবার সাথে আলাপ করে বিষয়টি দেখতেছি। তাছাড়া এ ব্যপারে ডিসি স্যারকে অবগত করেছি।
সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মীদের একটি অংশ বলছেন, “যে কর্মকর্তা ছাত্রদের কবর দিতে চেয়েছেন, তার সেমিনারে ছাত্রদের শহীদের নাম জপা একটা পরিহাস। এটা নীরব আপসের নমুনা।”
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।