মনপুরা প্রতিনিধি।।
ভোলার মনপুরায় সরকারের ঘোষিত ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচি কার্যত কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। মাঠ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের উদাসীনতা ও নিয়ম ভঙ্গের চিত্র।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সব ধরনের নদীর মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
বাস্তবে ভোলা জেলার মনপুরার বিভিন্ন ঘাটে — জনতা বাজার, তালতলি, লতাখালি, টেকের ঘাট ও মাঝের ঘাটে — শতাধিক ফিশিং বোট বরফ মজুদ করে অবাধে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, “৪ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিনই জেলেরা মাছ ধরছে, অথচ প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।”৯ অক্টোবর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে মনপুরা উপজেলা মৎস্য অফিস ও নৌবাহিনীর একটি যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে বিভিন্ন ঘাটের ৪৫টি ফিশিং বোটের বরফ নষ্ট করতে কেরোসিন ব্যবহার করা হলেও, জেলেরা ময়দা ব্যবহার করে বরফ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে। ওই রাতেই প্রায় শতাধিক ফিশিং বোট সমুদ্রে পাড়ি জমায় বলে জানা গেছে।
একাধিক স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মনপুরা উপজেলা মৎস্য অফিসকে এসব বিষয়ে অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

২৪অক্টোবর (শুক্রবার) সাংবাদিক মহিব্বুল্লাহ ইলিয়াছ এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উজ্জ্বল বর্ণিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।” কিন্তু পরবর্তীতে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি জানান, “আমার সঙ্গে মৎস্য কর্মকর্তার এই বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, “আমি মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এব্যাপারে জানাব এক ঘন্টা পরে আবারও যোগাযোগ করা হলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।”
এ অবস্থায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—
“মনপুরা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা কি টাকার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দিচ্ছেন?”
সরকারের ঘোষিত মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মনপুরা প্রশাসনের এই উদাসীনতা ও দুর্বল তদারকির কারণে পুরো উদ্যোগটি ব্যর্থতার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।