এইচ এম আনিছুর রহমান॥
মেহেন্দিগঞ্জ পৌর সভার দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লার অত্যাচার, অনাচার ও মানসিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে ঐ বিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষক একসাথে বদলির আবেদন করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর। তারা হলেন, সহকারি শিক্ষিকা সুমাইয়া ফেরদৌস, মাহিনুর আক্তার, ফেরদৌসি বেগম, মোঃ মামুন অর রশীদ ও নাজনীন আক্তার।
শিক্ষকরা জানান, ঐ প্রধান শিক্ষিকার নির্যাতনের মাত্রা সাম্প্রতিক এতোটা বেড়ে গেছে,তাদের এখন আর সুষ্ঠু মনোযোগে শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্ভব নয়। বিষয়টি গত কযেকদিন ধরে মেহেন্দিগঞ্জে টক অফ দা টাউনে পরিনত হয়েছে।
দাখিলকৃত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ঐ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা নাজনীন আক্তারের মাতৃত্ব বিষয়ক এবং মেডিকেল ছুটির জের ধরে বিগত ২০/১০/২৯২৪ ইং তারিখ থেকে সহকারি শিক্ষকদের সাথে ক্রমাগত খারাপ আচরন, মানসিক নির্যাতন এবং শিক্ষার্থীদের সামনে স্কুল বহির্ভূত পারিবারিক বিষয় তুলে তাদেরকে হেনস্তা করার অভিযোগ করা হয়েছে।
তারা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রধান শিক্ষক রুনা লায়লার ভাইয়েরা উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং মেহেন্দিগঞ্জের সাবেক এমপি পংকজ নাথের একান্ত আস্থাভাজন হওয়ার দাপট দেখিয়ে এতোদিন ধরাকে সড়াজ্ঞান করতো না। ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তন হলেও তার সেই দাপুটে স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি বরং আগের চেয়ে কয়েকগুন বেড়ে গেছে। গত ১০/১১/২০২৪ ইং তারিখে ঐ স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা মাহিনুর আক্তার ক্লাশে পাঠদান করার সময় দুর থেকে তা পর্যবেক্ষণ করে অহেতুক তাকে শিক্ষার্থীতের সামনেই অপমান অপদস্ত করে। এতে ঐ সহকারি শিক্ষিকা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে অসুস্থ হলে ছুটির আবেদন করলে তাকে ছুটি না দিয়ে পক্ষান্তরে আরো নানাবিধ বাজে কথা শোনায়। পরবর্তীতে ঐ ক্লাষ্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা কিরন চন্দ্র রাযের অনুমতিতে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ডাক্তারের পরামর্শে এখন তিনি বাড়িতে রেষ্টে আছেন। নারী শিক্ষকগন গর্ভবতী হয়ে স্কুলে আসলে তাদেরকে সে নানা প্রকার ভৎসনাসহ খারাপ ভাষা প্রয়োগ করে মানসিক টর্চার করা ছিলো তার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কোটা খালি থাকার পড়েও নতুন কোনো শিক্ষক এই স্কুলটিতে বদলি হয়ে আসতে চায়না। এর আগেও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ হলেও আমলা ভাই ও সাবেক এমপির দাপটে তাকে কোনো শাস্তি পেতে হয়নি।
এ ব্যাপারে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খগোপতি রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আবেদন পেয়েছি, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। বিষয়টি নিযে প্রধান শিক্ষক রুনা লায়লার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমার অধীনস্থ শিক্ষকদের পাঠদান মনিটরিং করায় আমার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে তারা একজোট হয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বদলির জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে দরখাস্ত দিয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবী, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষিকা রুনা লায়লাকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।