বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত বরিশালের কর্মসূচি কৃষক দলের নেতাকর্মীদের হামলায় পণ্ড হয়ে গেছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য ডা. মাহমুদা মিতু অভিযোগ করে বলেন, আমরা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দোয়া ও অলোচনা সভার আয়োজন করেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার জানিয়েছি, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু কৃষক দলের লোকজন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক শাকিল মৃধা জানান, আলোচনা সভার মধ্যে একদল লোক এসে আমাদের ‘আওয়ামী লীগের লোক’ বলে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং হামলা করে আয়োজন পণ্ড করে দেয়। হামলাকারীরা পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল মহানগর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মিছিল নিয়ে আসার পথে দেখি, জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামী লীগপন্থিরা সড়ক আটকে প্রোগ্রাম করছে। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে উপস্থিত লোকজন তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কর্মসূচি করতে এলে কিছু লোকজন তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। পরে নাগরিক কমিটির লোকজন কোতোয়ালি মডেল থানায় যান। সেখানে তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ছিলেন।
থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল মহানগরের সদস্যসচিব মো. শাহাদাত বলেন, নাগরিক কমিটির ভাইদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের নেত্রীসহ কিছু ভাই আহত হয়েছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই, সেইসাথে যারা এ হামলায় জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।
তিনি বলেন, হামলার শিকার যারা হয়েছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, প্রশাসনের ভূমিকা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট। কারণ তারা প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়ার পরেও তারা সাহায্য করেনি। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি কৃষকদল, শ্রমিকদল এবং যুবদলের পরিচয় দিয়ে বিএনপির স্লোগান দিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা চালিয়েছে।
উপস্থিত পুলিশ সদস্য রাশেদ জানান, আচমকা এক গ্রুপ এসে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের বলতে পারতো। আমরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু না বলে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। পরবর্তীতে উভয় গ্রুপকে ওই স্থান থেকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা শেষে নাগরিক কমিটির সদস্য সালমান জানান, আমরা হামলাকারীদের বিচারের পাশাপাশি উপস্থিত পুলিশ সদস্য যারা হামলাকারীদের বিরত করেনি, তাদেরও শাস্তির দাবি করেছি।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।