মঙ্গলবার, জানুয়ারি ৭, ২০২৫

দুর্নীতির দায়ে জনরোষে স্কুল ছেড়ে পালালেন প্রধান শিক্ষক

চরফ্যাশন প্রতিনিধি॥

ভোলার চরফ্যাসনে দুর্নীতি ও অনিয়ম ও শিক্ষকদের হেনস্তার দায়ে অভিভাবকদের জনরোষে পড়েছে গোলদার হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান। তার বিরুদ্ধে নানা সময় বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত, শিক্ষকদের হেনস্তাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে কোন প্রতিকার না পেয়ে মঙ্গলবার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে তিনি স্থানীয়দের খেয়ে ধাওয়া বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যান।

জানাযায়,গোলদার হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান আওয়ামী লীগের ক্ষমতার বলয়ে থেকে স্কুল ফান্ডের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। এমনি কি তিনি একাধিক শিক্ষককে হেনস্তা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তিনি শিক্ষকদের জিম্মি করে হেনস্তা ও নানা ভাবে হয়রানি করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় থেকে  টিসি দেওয়ার হুমকি দেন  শিক্ষক মাকসুদুর রহমান। তার এমন কর্মকান্ডে বিব্রত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তাকে তার পদত্যাগ চেয়ে প্রতিবাদ জানালে উল্টো তার হেনস্তার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তিনি একটি অপশক্তির প্রভাবে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন ওই বিদ্যালয়ে নানা অপকর্ম। তার পদত্যাগের দাবী করে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন জানান,তিনিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দিয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত প্রধান শিক্ষক  মাকসুদ রহমান
গত ৩১ ডিসেম্বর  স্কুলের লাইব্রেরীতে শিক্ষকদের হেনস্তা করেন। আমাকে হুমকি দিয়েছেন স্কুলে না যেতে। আমি আগামীকাল  স্কুলে যাবো। শুধু আমি না, তার ভয়ে শিক্ষকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে  আরও সহকারী শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান অন্য একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষক ছিলেন। হঠাৎ একদিন শুনি তিনি আমাদের  প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে গোপনে যাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তারা সবাই তার লোক। এভাবে হঠাৎ করেই তাকে প্রধান শিক্ষক করা হয়। ইচ্ছামতো ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করে শিক্ষা বোর্ডকে দিয়ে অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতি করেছেন মাকসুদুর রহমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনিয়ম করলেও তার ভয়ে শিক্ষকরা কিছুই বলতে পারেন না।

ওই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মো. রুহুল আমিন গোলদার জানান, ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারনে ভেস্তে যাচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার বলয়ে থেকে  তিনি ওই বিদ্যলয়ে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ২০২০ সনের তিনি কাউকে না জানিয়ে  বিদ্যালয়ের ৭০ হাজার টাকার মূল্যের  ১০ টি মূল্যবান গাছ কেটে বিক্রি করে দেন।
এছাড়াও তিনি ২০২২ সনে বিদ্যালয়ের একটি টিন সেট পুরাতন ঘর ৪৩ হাজার টাকা বিক্রি করে ওই টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন। এবং পি.বি.জি.এসআই.এস.ই.ডি.পি. মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত ৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২৩ সালে শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ পাঁচ লাখ টাকার চার লাখ টাকা একাই আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক ও টেন্ডার ছাড়াই স্কুলের পুরাতন বিল্ডিং বিক্রি করে ৫০০০০ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানাযায়নি।

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. খলিলুর রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ মতে ওই স্কুলটি পরিদর্শন করেছি। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি জানান, বিয়ষটি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. খলিলুর রহমানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন

Monpura

মনপুরায় অবৈধ উপায়ে ট্যাংরা মাছ বিক্রি, জব্দ করেছে মৎস বিভাগ

মনপুরা প্রতিনিধি ‍॥ ভোলার মনপুরায় বাজারে বিক্রির সময় মেঘনা নদী থেকে অবৈধ উপায়ে ধরা এক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *