বুধবার, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
barisal
barisal

পরিবেশবান্ধব ‘ঠোঙা’র কদর কমছে নিষিদ্ধ পলিথিনের কারণে

বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥

দেশে পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও কাগজের তৈরি ঠোঙার ব্যবহার আশানুরূপ বাড়েনি। বরং, পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহার কমে যাওয়ার পরও কাগজের ঠোঙার চাহিদা কমে গেছে। ঠোঙা তৈরির কারিগররা অভিযোগ করছেন, পলিথিনের অবাধ ব্যবহার ঠোঙার কদর কমিয়ে দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের মতে, ক্রেতারা ঠোঙার পরিবর্তে পলিথিন ব্যাগকেই বেশি পছন্দ করছেন, এবং আধুনিক যুগে ঠোঙার সঙ্গে তাদের প্রয়োজনীয়তা কমেছে।

তবে, বরিশালে এখনও অনেক নারী গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি ঠোঙা তৈরি করে থাকেন। তাদের এই কাজ থেকে যে আয় আসে, তা দিয়ে সংসারের কিছুটা সচ্ছলতা বজায় থাকে। বরিশাল নগরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব পারুল বেগম ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ঠোঙা তৈরি করছেন। তিনি জানান, সস্তা পলিথিনের প্রাধান্য ঠোঙার কদর কমিয়েছে। তবে, অনেকেই এখনও এই কাজে জড়িত রয়েছেন।

পারুল বেগম বলেন, ঠোঙা তৈরিতে ব্যবহৃত কাগজ, আটা, তুঁতের দাম বেড়েছে, ফলে ঠোঙার দামও বাড়িয়েছে। বর্তমানে এক কেজি ঠোঙা পাইকারি বাজারে ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা থেকে ১০-১৫ টাকার মতো লাভ হয়। তিনি আরও বলেন, একসময় পলিথিনের প্রচলন কম থাকলেও ঠোঙার চাহিদা ছিল, কিন্তু এখন চাহিদা কমে গেছে, কারণ পলিথিন সহজলভ্য এবং সস্তা।

অপর একজন ঠোঙার কারিগর, তুলি বেগম বলেন, যদি চাহিদা বাড়ে, তবে তারা ঠোঙার উৎপাদন বাড়াতে পারবেন। তিনি জানান, ঠোঙা তৈরির জন্য কাগজ, আটা ও তুঁতের সরবরাহের জন্য বাজারে সঠিক যোগান থাকা উচিত। তিনি নিজে গৃহকর্মের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঠোঙা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন।

কাজল মহুরী, আরেকজন গৃহবধূ, বলেন, ঠোঙা তৈরি করে তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। স্বামীর উপার্জনের পাশাপাশি তিনি ঠোঙা তৈরি করে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ যোগাচ্ছেন এবং সংসারের অন্যান্য খরচও মেটাচ্ছেন।

এদিকে, লিজা আক্তার মনে করেন, পলিথিন নিষিদ্ধ হলে ঠোঙার কদর বাড়বে এবং নারীদের জন্য আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি জানান, ঠোঙা তৈরির জন্য গৃহস্থালি সামগ্রীর যোগান থাকলে, এটি সহজেই ঘরে বসে করা যেতে পারে। তবে বর্তমানে ঠোঙার দাম বেড়েছে এবং চাহিদা কমেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পলিথিনের বিস্তারের কারণে ঠোঙার ব্যবহার কমে গেছে। রুম্মান, একজন ফল ব্যবসায়ী, বলেন, ক্রেতারা ঠোঙা নিতে আগ্রহী না, তারা পলিথিন বা নেটের ব্যাগে পণ্য নিতে prefer করেন। তবে, পরিবেশবান্ধব কাগজের ঠোঙার সুবিধা সত্ত্বেও মানুষ তা ব্যবহার করতে চাইছে না।

তবে, সঞ্জয় কর্মকার, একটি মুদি দোকানের মালিক, জানান, ঠোঙার ওজন বাদ দিয়ে যখন পণ্য মাপা হয়, তখন ক্রেতারা নানা অভিযোগ করেন। তার মতে, ঠোঙা ব্যবহার করলে মালামাল বেশি সতেজ থাকে, কিন্তু ক্রেতাদের সচেতনতা ও আগ্রহের অভাবে পরিবেশবান্ধব ঠোঙার ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

আরো পড়ুন

excident

বিএম কলেজ সংলগ্ন সড়কে শিশু নিহত, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ বছরের শিশু জান্নাত নিহত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *