জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির আবেদন করার সময় প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলনা মো. নাজিম উদ্দিনের। তারপরও তিনি ২০২৩ সালে ওই পদে চাকরি নেন । নিয়মিত উত্তলন করছেন সরকারি বেতন-ভাতাও। সম্প্রতি ভুয়া সনদে আবেদন জমা দিয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নাজিম উদ্দিন ২০২৩ সালে ২৪ জানুয়ারী লালমোহন উপজেলার চর উদয়কালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন । তার বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ড হার্ডিঞ্জ গ্রামে । বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে সনদ জালিয়াতির প্রমাণ বাংলাদেশ বাণীর হাতে এসেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর । বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২৪ নভেম্বর । সহকারী শিক্ষক পদে প্রার্থীদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি পাস । নাজিম উদ্দিন স্নাতক পাস না করলেও ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে স্নাতক পাসের জাল সনদ দিয়ে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন ।
আরও জানা গেছে, শিক্ষক নাজিম উদ্দিন ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে গণিত বিভাগের ছাত্র ছিলেন । ওই বিষয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের ২৫ জুলাই । চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এর আগের বছরের ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর । আবেদন গ্রহণ ২৫ অক্টোবর শুরু হয়ে শেষ হয় একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর । তিনি স্নাতক পাস করেছেন ২০২০ সালের ২৫ জুলাই। তাই তিনি ওই সময় ওই পদে চাকরির আবেদন করার যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন না । তবুও এই শিক্ষক ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারী জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের অফিস আদেশে লালমোহন চর উদয়কালী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন পান । তার নিয়োগ পরীক্ষার রোল (৭১১৮৩০৫)।
ভুয়া সার্টিফিকেটে চাকুরী নেওয়ার বিষয়ে জানার জন্য শিক্ষক নাজিম উদ্দিনকে ফোন করা হলে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সদুত্তর দেননি।
বাংলাদেশ বাণীকে তিনি বলেন, ‘আমি চিনি না । আপনি সাংবাদিক কি না, সেটা আমি কীভাবে বুঝব?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন । আমার কোনো সমস্যা নাই, কতৃপক্ষ সব জেনে নিয়োগ দিয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি করার আগে চিন্তাভাবনা করার পরামর্শও দেন তিনি।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে, ‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ বাণীকে বলেন, ‘ আমি এই বিষয়টি অবগত নই, ‘ এমন হওয়ার কথা না, ‘আবার হতেও পারে। যেহেতু অভিযোগ ওঠেছে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।