কুয়াকাটা পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভা সংলগ্ন মুসুল্লিয়াবাদ আলতাফ মুসুল্লির দোকান থেকে সাধুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পাকা হয়নি। বর্ষা এলেই হাঁটুসমান কাঁদা ও অসংখ্য গর্তে রূপ নেয় সড়কটি। এতে আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শুষ্ক মৌসুমে এই পথ দিয়েই শত শত ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করলেও বর্ষায় তা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। গর্তে পানি জমে দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও সড়কটির উন্নয়নের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
এই সড়কটি পর্যটকদের জন্যও একটি বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রাখাইন তাঁতপল্লি, রাখাইন জাদুঘর ও গঙ্গামতি সূর্যোদয় পয়েন্টে যেতে ভ্রমণপিপাসুরা প্রায়ই এই রুট বেছে নেন। ফলে পর্যটন শিল্পেও এর প্রভাব পড়ছে।
মুসুল্লিয়াবাদ সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী ফারজানা জানায়, “প্রতিদিন কাঁদা মাড়িয়ে মাদ্রাসায় যেতে হয়। শুকনো মৌসুমে ভারী যান চলাচলের কারণে যেসব গর্ত তৈরি হয়, বর্ষায় সেগুলো আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। পড়ে গিয়ে অনেকবার ভেজা কাপড়েই ক্লাস করতে হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রাস্তার আশপাশের সড়কগুলো পাকা হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বছরের পর বছর অবহেলিত। জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছার অভাবেই উন্নয়ন আটকে আছে।”
আলীপুর-মহিপুর মাছবন্দর ও লতাচাপলীর সাপ্তাহিক হাটে কৃষিপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয় সড়কটি। ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছাতে হয় মারাত্মক কষ্টের মধ্য দিয়ে।
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মুসুল্লি বলেন, “এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বহুবার আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু এখনো কাজের অগ্রগতি নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত সড়কটি পাকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
“এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাদিকুর রহমান বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এখনো কাঁচা রয়েছে, যেগুলো পাকা করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বরাদ্দের অভাবে আমরা সেই কাজ করতে পারছি না। তবে নতুন প্রকল্প আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে এসব সড়ক দ্রুত পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।