লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি:
দেশের অন্যতম স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ রাজধানী ঢাকার নটরডেম কলেজ। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পড়ালেখা করার স্বপ্ন থাকে বহু মেধাবী শিক্ষার্থীর। তবে সবার সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। যদিও দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একসঙ্গে ৭ শিক্ষার্থী নটরডেম কলেজের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এই প্রথম দ্বীপ জেলা ভোলার একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে নটরডেম কলেজে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সুযোগ পাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আস্থা ফিরছে। দেশের অন্যতম স্বনামধন্য নটরডেম কলেজে প্রত্যন্ত এলাকার এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই ৭ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নটরডেম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই শিক্ষার্থীরা হলো- বিজ্ঞান বিভাগে ইফতেখার আহমেদ জিসান, সাদমান মুক্তাদিন অন্তু, মো. জুবায়ের ইসলাম, ইসমাইল হোসেন ইমন, মাহাদি ইসলাম আলভী, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ফয়েজ আলম জিদান এবং মানবিক বিভাগে মো. জুবায়ের হোসেন জিসান। এসব শিক্ষার্থীরা লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়।
ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবক মো. ইয়াছিন বলেন, আমি নিজে একটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। সত্যিই হা-মীমের শিক্ষারমান অনেক ভালো। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে নানাভাবে তাদের কর্মকাণ্ড ও পড়ালেখার ধরন পর্যবেক্ষণ করে অভিভূত। কারণ তারা একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মেধাবী হিসেবে গড়ে তুলতে যত ধরনের চেষ্টার প্রয়োজন তা করেন। তাই আমার ছেলেকে হা-মীমেই পড়িয়েছি। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই আমার ছেলে এসএসসি পাস করে দেশের অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নটরডেম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ছেলের এমন সাফল্যে আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত।.
লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. জহিরুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবক জানান, আমার ছেলে এ বছর হা-মীম থেকে এসএসসি পাস করেছে। এরপর সে নটরডেম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এ জন্য আমি হা-মীম সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সত্যি বলতে পুরো জেলার মধ্যে হা-মীম পড়ালেখার মানের দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে। কারণ এ বছর সারাদেশে যখন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের চরম বিপর্যয়, তখনো হা-মীমের ১০৫ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে। এদের মধ্যে ৪৫ জন আবার পেয়েছে জিপিএ-৫।
নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এমন সাফল্যের ব্যাপারে লালমোহন হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা বহুসংখ্যক বিষয়ভিত্তিক মেধাবী শিক্ষক রয়েছেন। তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত যত্নসহকারে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করানো হয়। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন সুশিক্ষিত মানুষ হয়ে উঠবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে যারা এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নটরডেমে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে আমি তাদের সবার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে এই প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের ব্যাপারে নানান অভিযোগ করা হতো। তাঁরা বিভিন্ন কায়দায় তদবিরের মাধ্যমে ভালো ফলাফল করেন। সেই অভিযোগ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন প্রতিষ্ঠানটি। কারন গত এস এস সি পরীক্ষায় নকলমুক্ত ও তদবীর ছাড়া হওয়ায়। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিপর্যয় ঘটলেও হা- মীম রেসিডেনসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ফলাফল অক্ষুন্ন রেখেছে। অপর দিকে এইসএসসির ভর্তি পরীক্ষায় সাতজন শিক্ষার্থী নটরডেম কলেজে সুযোগ পাওয়ায় আস্থা ফিরেছে অভিভাবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে। অপবাদ থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।