শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিফাতের আয়েই চলে সংসার

কাজল দে হিজলা প্রতিনিধি।।

“আইজ দেড় বছর ধরে আমার স্বামী আমাদেরকে থুয়ে চলে গেছে আমার চারটি পোলাপান নিয়া খাইতে লইতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় না খাইয়া থাহি। আমার পোলারে এহন পড়ালেহা বাদ দিয়া আমাগোরে খাওনের লইগ্গা গাঙ্গে যাইতে হয়। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই”। এভাবেই দুই বছরের কন্যা সন্তান রিমিকে কোলে নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলেন চার সন্তানের জননী মারুফা বেগম।

হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামের মারুফা বেগম চার সন্তান নিয়ে এভাবেই অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছেন। পান না কোনো সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। একই গ্রামের নুরুল ইসলাম মাতাব্বর’র ছেলে মোঃ রাসেল মাতাব্বর’র সাথে চৌদ্দ বছর আগে বিয়ে হয় মারুফা বেগমের।

সুখে শান্তিতে কাটছিল তাদের সংসার। কিন্তু বাঁধ সাধে বছর দেড়েক আগে বাথুয়া গ্রামের নজির হাওলাদার এর বিবাহিত মেয়ে খালেদার সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যান মোঃ রাসেল মাতাব্বর’র। সম্পর্ক গভীর হলে একদিন খালেদাকে নিয়ে পালিয়ে যান রাসেল মাতাব্বর’র। অনেক খোঁজাখুঁজি পরে পরিবার জানতে পারে তারা ঢাকায় আছেন। এখন স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো খোঁজ খবর নেন না রাসেল।

সিফাতের দাদা নুরুল ইসলাম বলেন, “রাসেল চলে যাওয়ার পর ওর বৌ চাইরডা পোলাপান নিয়া অনেক সময় না খাইয়া দিন কাডায়। আমার বয়স হইছে তেমন কাজ করতে পারি না। আমার নাতি সিফাত স্কুলে যাইতো এহন পড়ালেহা বাদ দিয়া গাঙ্গে যায় সংসার চালানোর জন্য। ওগো নামে কোনো সরকারি কার্ড ও নাই। ওরা সরকারি সাহায্য পাইলে খাইয়া পড়িয়া ভালো বাঁচতে পারতো”।

ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বড় মেয়ে সিনথিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলে, আমার দাদায় আমাগোরে দেখিয়া রাহে। আমাগো চলতে অনেক কষ্ট হয়। আমি টাহার লইগা স্কুলে যাইতে পারি না। আমার ভাইর আমাগোরে খাওয়ানোর জন্য স্কুল বাদ দিয়া কামাই করতে হয়। বাবায় গত কোরবানি ঈদে আইছিল, দুই দিন পর আবার আমাগোরে না বলিয়া চলে গেছে।

এলাকাবাসী জানান, নজির হাওলাদার এর মেয়ে খালেদার জন্য আজ এই সংসারের এই অবস্থা। খালেদা এর আগেও তিনটি সংসার নষ্ট করেছে।

সরকারের সুদৃষ্টি পেলে এই পরিবারটি খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারতো। আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *