এম জামাল বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি।।
২০১৯ সালের ২০অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিনে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী চার রাসুলপ্রেমিক শহীদের স্মরণে এক বিশাল ওয়াজ মাহফিল ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ও তাওহীদি জনতার যৌথ উদ্যোগে সোমবার বিকেলে বোরহানউদ্দিন হাই স্কুল মাঠে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমিরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মূফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা-২ জামায়েত ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ ফজলুল করিম। সভাপতিত্ব করেন হযরত মাওলানা মোহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ দা:বা: (পীর সাহেব) খানকায়ে বশিরিয়া, বাটামারা, বোরহানউদ্দিন।
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মাহফিলের সূচনা হয়। এরপর শুরু হয় স্মৃতিচারণ পর্ব। আহতরা ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবরের সেই রক্তাক্ত দিনের করুণ স্মৃতি স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা আমীর মাওলানা মাকসুদুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের সেই রক্তাক্ত ২০ অক্টোবর বোরহানউদ্দিনের ইতিহাসের সবচেয়ে বেদনাবিধুর দিন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশ নেওয়া তাওহীদি জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। সেদিন শাহাদতবরণ করেন চার রাসুলপ্রেমিক— হাফেজ মাহফুজ, হাফেজ মাহবুব, হাফেজ মিজান ও মোঃ শাহীন। আহত হন দুই শতাধিক তাওহিদী জনতা। কেউ হারান চোখের আলো, কেউ পা, কেউ বাকশক্তি।”
তিনি আরও বলেন, “এই শহীদদের ত্যাগ বৃথা যায়নি; তাদের রক্তের বিনিময়ে আজ গোটা জাতি রাসুলপ্রেমের চেতনায় জেগে উঠেছে।”
বিশেষ অতিথি মুফতি ফজলুল করিম বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয়। যারা তাঁর প্রেমে জীবন উৎসর্গ করেছেন, তারা আল্লাহর দরবারে সম্মানিত শহীদের মর্যাদা পেয়েছেন। মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইসলাম কখনো পরাজিত হবে না। শহীদদের রক্তে যে তাওহীদের বীজ বপন হয়েছে, তা আজ তরুণ প্রজন্মের অন্তরে ঈমানের শিখা হয়ে প্রজ্বলিত হয়েছে। আমাদের কর্তব্য এই ত্যাগের ইতিহাস যেন ভুলে না যাই।
প্রধান অতিথি পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিগত মুসলিমবিদ্বেষী সরকার মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা বিলুপ্ত করার চেষ্টায় দারুইনীয় শিক্ষা ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছিল। ইসলামী সংস্কৃতি ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আলেম-ওলামা ও রাসুলপ্রেমিকদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। আমাদের দায়িত্ব—ঐ শহীদদের রক্তের চেতনায় ইসলামের পতাকা উচ্চে ধরে রাখা।
মাহফিলে স্থানীয় আলেম-ওলামা, তাওহীদি জনতার হাজারো মুসল্লি, ইসলামপ্রেমী তরুণ ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া শেষে মাহফিলের আবেগঘন মুহূর্তে উপস্থিত মুসল্লিদের চোখ ছিল অশ্রুসজল। সবাই নব উদ্দীপনায় রাসুলপ্রেম ও তাওহীদের আহ্বানে ঘরে ফেরেন— শহীদদের ত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে ঈমান ও ঐক্যের শপথ নবায়ন করেন।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।