আহমেদ বায়েজীদ, বিশেষ প্রতিবেদক
পরস্পরের সহকর্মী তারা, কিন্তু সহসা কারো সাথে কারো দেখা হয় না। তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন অঞ্চলের নানা প্রান্তে। প্রতিদিন তাদের টিমওয়ার্কের ফল হিসেবে পাঠকের হাতে যায় জেলা উপজেলার নানা খবর। গত এক বছরে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল হিসেবে প্রচার সংখ্যায় বরিশাল বিভাগের শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে দৈনিক বাংলাদেশ বাণী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তাই এই পরিশ্রমী কর্মীদের এক মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছিলো বরিশাল প্রেসক্লাবে। বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কর্মরত দৈনিকটির প্রতিনিধিদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে প্রতিনিধি সম্মেলনটি রূপ নিয়েছিলো এক আনন্দ আয়োজনে।
২০২৪ সালের ১ নভেম্বর নতুন আঙ্গিকে রঙিন ছাপায় প্রকাশ শুরু হয় দৈনিক বাংলাদেশ বাণী। সে হিসেবে আগামী ১ নভেম্বর নতুন ব্যবস্থাপনায় প্রকাশের এক বছর পূর্তি হবে। এই এক বছরেই পত্রিকাটি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের পাঠকদের হৃদয় জয় করেছে। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বরিশাল প্রেসক্লাব অডিটরিয়ামে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজন করা হয় প্রতিনিধি সম্মেলন। জেলা ও উপজেলায় কর্মরত বাংলাদেশ বাণীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সংবাদমাধ্যমটির অন্যান্য পর্যায়ের সংবাদকর্মীরাও। 
সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে প্রতিনিধিরা আসতে শুরু করেন। নাস্তাপর্ব শেষে সকাল সাড়ে নয়টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ বাণীর প্রকাশক অ্যাডভোকেট মু. শাহে আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশ বাণীকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি জনপদের পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এবং সেখানকার খবরগুলোও তুলে আনতে হবে। শুধু প্রচারসংখ্যায় শীর্ষে পৌঁছলেই পত্রিকার দায়িত্ব পালন শেষ হয় না, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে হবে বাংলাদেশ বাণীকে।
তিনি আরো বলেন, মফস্বলে- বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকতা করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। সেখানে অনেক বেশি বাধা বিপত্তি আসে, তবে নৈতিকতা ও সাহসিকতার সাথে কাজ করতে পারলে আপনারা সেই সব চ্যালেঞ্জ জয় করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যে কোন ইস্যুতে তাদের পাশে থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বাণী নতুন আঙ্গিকে প্রকাশের প্রথম বছরে যেভাবে প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে উঠে এসেছে, একইভাবে আগামী দিনগুলোতে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এবং জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের দিনগুলোতে সরকার ও মালিক পক্ষের শৃঙ্খলে বন্দি ছিলো গণমাধ্যম। রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। গণমাধ্যমের দায়িত্ব গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে রাজনীতিবিদদের ভুলগুলো তুলে ধরা। আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশ বাণী বরিশাল অঞ্চলে এই দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নেবে। অনুষ্ঠানের ফাঁকে রহমতুল্লাহ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ বাণী পরিবারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন হাওলাদার তার বক্তৃতায় বলেন, গণমাধ্যম দায়িত্বশীল হলে সমাজ ও দেশকে বদলে দেয়া সম্ভব। গণমাধ্যমই পারে দূষিত সমাজকে সংশোধনের পথে নিয়ে আসতে। এ জন্য সাংবাদিকদের নৈতিকতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। তাই বাংলাদেশ বাণীর সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সমাজ ও দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে সাংবাদিকতা করে যেতে হবে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ডা. কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আল্লাহ আমাদেরকে সত্য ন্যায়ের সাথে কাজ চালিয়ে নেয়ার যে সুযোগ দিয়েছেন সেটাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। সেটি করতে পারলে বাংলাদেশ বাণী যেমন সংবাদমাধ্যম হিসেবে বড় হয়ে উঠবে, পাশাপাশি বরিশাল অঞ্চলের সংবাদমাধ্যমের চিত্রও বদলে যাবে।
সম্পাদক আযাদ আলাউদ্দীন বলেন, প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে আসার পর শিগগিরই বাংলাদেশ বাণী মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হবে। আমরা ছাপা কাগজের মতো মাল্টিমিডিয়াতেও বরিশালের শীর্ষস্থান অর্জন করতে চাই।
প্রকাশক অ্যাডভোকেট মু. শাহে আলম তার সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশ বাণী বৈষম্যের বিরুদ্ধে যে স্লোগান নিয়ে প্রকাশিত হতে শুরু করেছে সেই জায়গা থেকে চুল পরিমাণও বিচ্যুত হওয়া যাবে না। নৈতিকতার মানদণ্ডে এগিয়ে থেকেই বাংলাদেশ বাণী তার সাফল্যের যাত্রা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি প্রতিনিধিদের কাজের ব্যাপারে সব ধরণের পেশাগত ও কারিগরি সহায়তা দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক কীর্তনখোলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বাংলাদেশ বাণীর প্রাক্তন বার্তা প্রধান পথিক মোস্তফা, জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সিনিয়র রিপোর্টার সাখাওয়াত প্রিন্স, বাংলাদেশ বাণীর বার্তা সম্পাদক ফাহিম ফিরোজ, বিশেষ প্রতিবেদক আহমেদ বায়েজীদ, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন শিকদার, সার্কুলেশন ম্যানেজার আহমেদ রিপন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন পর্যায়ে সেরা কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কয়েকজন প্রতিনিধি ও প্রতিবেদককে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া উপস্থিত সকালের হাতে শুভেচ্ছা উপহার সামগ্রী তুলে দেন কর্তৃপক্ষ।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।