মোশাররফ মুন্না ॥
“দেশটা তোমার বাপের নাকি, করছো ছলাকলা/ সুযোগ পেলেই ধরছো চেপে জনগণের গলা। মনে রেখো যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি/দেশ বাঁচাতে রক্ত দিতেও রাজি আছি। ভয় দেখিয়ে হবে না রে কাম, ও বাছারাম।
জুলাই বিপ্লবে এই গান ছিল মানুষের মুখে মুখে। কাঁপিয়েছে পুরো নেট দুনিয়া। ‘আওয়াজ উঠার মতো তুমুল আলোচিত র্যাপ গানের পাশাপাশি নাজনীন মৌসুমীর এই গানটিও স্বৈরাচার হাসিনা উৎখাতের আন্দোলনে বেশ অনুপ্রাণিত করেছে ছাত্রসমাজকে। গানটির সোজাসাপটা প্রতিবাদি কথা ও সুরের মুন্সিয়ানা খুব দ্রুতই গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় গানটি। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে এই গানটি। সোশ্যাল মিডিয়ার সবগুলো প্লাটফর্মে ভাইরাল হয়ে যায় প্রতিবাদি এই গান। গানটি প্রথম শোনা যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসমাবেশে।
নাজনীন আখতার মৌসুমী কণ্ঠে তুললেও জনপ্রিয় এই গানটির গীতিকার ইথুন বাবু। তবে যশোরের এক গায়িকা দাবি করেছেন, এই গান মঞ্চে তিনিই প্রথম গেয়েছেন। যদিও গানটি প্রথমে রেকর্ড করেন নাজনীন মৌসুমী। তিনি নওগাঁর মেয়ে। হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে নাজনীনের এই গান কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে। এই গান গেয়ে ঘরছাড়াও হন তিনি। বিগত এক বছর পালিয়ে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। তবে বন্দুকের নল কিংবা শাসকের রক্তচক্ষুর সঙ্গে আপোস করেননি মোটেও। গানটি গাওয়ার পরে তার বাবার উপর বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসতে থাকে। তখন মৌসুমীই তার বাবাকে সাহস যোগান।
গানটি মূলত ২০২২ সালে বিএনপির আন্দোলনের জন্য লেখা হয়। ইথুন বাবুর লেখা গানটির সুর সংগৃহীত। গানটির জন্য নাজনীনকে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননাও দেয়া হয়।
বাংলাদেশের পাশাপাশি এই গানটি ভারতের কয়েকটি আন্দোলনেও তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গানটি গাওয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাকে সামনে এনে আসামের এক সংগীত শিল্পীকে আটকও করে সেখানকার প্রশাসন।