মোঃ মাহতাব হাওলাদার মহিপুর প্রতিনিধি।।
বঙ্গোপসাগরে জেলের বড়শিতে ধরা পড়েছে এক আশ্চর্য অতিথি-৩৭কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ‘কালো পোয়া’। স্থানীয়রা একে বলেন ‘দাঁতিনা’, কেউ আবার ডাকেন ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’। নামের মতোই এর মূল্যও চোখ ধাঁধানো— উঠেছে এক লাখ ২০হাজার টাকা পর্যন্ত!
বুধবার (১২নভেম্বর) সকালে পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য বন্দরের মনোয়ারা ফিশে যখন মাছটি তোলা হয়, তখন যেন মেলায় পরিণত হয় ঘাট এলাকা। মোবাইলের ফ্ল্যাশে ঝলসে উঠতে থাকে সেই মাছের ঝকঝকে দেহ, আর মানুষ বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে— এমন মাছ জীবনে হয়তো খুব বেশি দেখা যায় না।
এই সৌভাগ্যের মালিক ট্রলার ‘আল্লাহর দান’-এর মাঝি মো. তরিকুল। তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ‘বড়শিতে এমন মাছ উঠবে, ভাবতেই পারিনি। এত বড় কালো পোয়া জীবনে প্রথম দেখলাম!’
বাজারে দাম উঠেছে লাখ ছাড়িয়ে, কিন্তু তরিকুল এখনই বিক্রি করছেন না। তাঁর চোখ চট্টগ্রামমুখী— হয়তো সেখানেই আরও বড় দর উঠবে।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ রানা হাওলাদার বলেন, ‘এমন মাছ সহজে মেলে না। সকাল থেকে মানুষ ভিড় করে ছবি তুলছে, দাম শুনে সবাই হতবাক।’
গবেষকরা বলছেন, এই মাছ শুধু ওজনেই নয়, দামের কারণেও অনন্য। ইকোফিশ বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী বখতিয়ার রহমান জানান, ‘কালো পোয়া’র বায়ুথলি আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত দামি— চীনা ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।’
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সুফলই এখন জেলেরা পাচ্ছেন। দুষ্প্রাপ্য মাছের আবির্ভাব উপকূলীয় সম্পদের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। চলতি বছরে মহিপুর-আলিপুর মৎস্য বন্দরে এ প্রজাতির পাঁচ থেকে ছয়টি মাছ ধরা পড়েছে।’
সাগরের গভীর থেকে উঠে আসা এই ‘কালো হীরক’ এখন শুধু তরিকুলের ভাগ্যের নয়— পুরো উপকূলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।