শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫
Oplus_0

কাউখালীতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল ভবন ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি

কাউখালী প্রতিনিধি
কাউখালীতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল ভবন ১৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। ফ্যাসিষ্ট সরকারের প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর ভাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সালে টেন্ডার নিয়েও সামান্য কাজ করে বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। অবশেষে ১৭ বছর পর দুদকের জালে ধরা পড়ে এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িতরা।

দুদক সাম্প্রতিক পিরোজপুর আদালতে তিন প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন। পিরোজপুরের দুদক কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো: মোয়াজ্জেম হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পিরোজপুর দুদক কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম।

মামলার আসামি করা হয়েছে পিরোজপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক সহকারি প্রকৌশলী মো: বজলুর রহমান খান, বরিশাল স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী দুলাল চন্দ্র সরকার, পিরোজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী শৈলেন্দ্র নাথ মন্ডল এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূরী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো: নাসির উদ্দিনকে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানা যায় পিরোজপুরের কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন ১৮ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। পরে ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর টেন্ডারের মাধ্যম বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস নূরী এন্টার প্রাইজকে প্রায় ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে তিন তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করার জন্য ওয়ার্ক অর্ডার দিলে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছিল।নুরী এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায় সামান্য কিছু কাজ করে বাকী কাজ ফেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত বিল উত্তোলন করার অপচেষ্টা চালায়।

জানা গেছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের সাথে যোগসাজশে অসৎভাবে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করণ প্রকল্পের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ও পিডি ভবন এবং ১০০০ বর্গ ফুট ও ৮৮০০ বর্গফুটের পৃথক দুইটি আবাসিক ভবনের নির্মাণ কাজ করার কথা যাহা ২০০৮ সালের ২৫ জুন চুক্তি সম্পাদন হয়ে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ করে হস্তান্তরের কথা ছিল।

নূরী এন্টারপ্রাইজ চুক্তি মোতাবেক ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনে ৮ ফুট গভীরতা করে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ৪ ফুট করেই কাজ শুরু করেন। ২০ মিলি রডের পরিবর্তে ১৬ মিলি, ১৬ মিলির পরিবর্তে ১২ মিলি রড ব্যবহার করেন। এমনকি ফাউন্ডেশনের গভীরতা কোন কোন স্থলে ছয় ফুটের স্থলে চার ফুট, ৮ ফুটের স্থলে চার ফুট গভীর করে ফাউন্ডেশন এর কাজ করেন।

এছাড়াও প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি অনুযায়ী কোন কাজই করেন নাই। অথচ ৬৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৮৩ টাকার কাজ করে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৬২ টাকার বিল উত্তোলন করে আত্মসাতকরার অপচেষ্টা করে ছিল। অপরদিকে এই কাজ অসমাপ্ত রেখেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলতি বিল নিয়ে চলে যাওয়ায় তাদের করা অবকাঠাম গুলো কোন কাজে আসে নাই। বরং সরকারি অর্থ অপচয় করা হয়েছে। ভবনের কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় কাউখালী দেড় লক্ষাধিক মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পিরোজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিলা ফেরদৌস জানান, পিরোজপুরে তিনি নুতান যোগদান করেছেন মামলা হয়েছে কিনাএ বিষয় কিছুই জানা নেই। মামলার বাদী পিরোজপুর দুদক কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো: মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন অধিকতর তদন্ত শেষে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি সাধন ও আত্মসাৎ এর অপচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

আরো পড়ুন

নতুন কাঠামো ও ডিইউ অধিভুক্তির বিরুদ্ধে সোহরাওয়ারদী কলেজের শিক্ষকদের মানববন্ধন

পিরোজপুর প্রতিনিধি সাতটি সরকারি কলেজের জন্য প্রস্তাবিত নতুন কাঠামো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *