সাকী মাহবুব পাংশা প্রতিনিধি।।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মুছিদাহ গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া। মৃত্যুর কাছে হার মানলেন মুছিদাহ গ্রামের আবু জাফর মন্ডলের ছেলে তরুণ নায়েব আলী।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান-বাঁচতে হলে অবিলম্বে কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
কিন্তু দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারে সেই চিকিৎসার খরচ বহন করাই ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। ঠিক সেই সংকট মুহূর্তে সব দ্বিধা–দ্বন্দ্ব পেছনে ফেলে নিজের একটি কিডনি ছেলেকে দান করার সিদ্ধান্ত নেন নায়েব আলীর মা। সন্তানের জীবন বাঁচাতে একজন মা যে কতটা শক্ত হতে পারেন-মুছিদাহ গ্রাম সেই দৃশ্য চোখে দেখেছে।সমস্ত ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ঢাকা কিডনি ফাউন্ডেশনে সফলভাবে প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। অস্ত্রোপচারের পর কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত সেই আলো টিকল না।
কিডনি প্রতিস্থাপনের পর জটিলতা বাড়তে থাকে। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে চলে যান নায়েব আলী-না ফেরার দেশে। ন্যায়েব আলীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে নেমে আসে নীরবতা। মা ছেলের নিথর দেহ আঁকড়ে ধরে বারবার বলে উঠছিলেন—“আমি তো সব দিলাম বাবা… তবুও কেন রইলে না?”
উপস্থিত মানুষের চোখে-মুখে কান্না আর বেদনার ভার। গ্রামবাসীরা জানান, নায়েব আলী ছিলেন শান্ত, ভদ্র ও পরিশ্রমী এক তরুণ। তাঁর চলে যাওয়া শুধু পরিবারের নয়, পুরো গ্রামের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, সন্তানের জীবনের জন্য সংগ্রাম এবং শেষ পর্যন্ত নির্মম পরিণতি—এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, জীবন কতটা নাজুক আর অনিশ্চিত। ৩ডিসেম্বর বাদ জোহর মুছিদাহ, খামারডাঙ্গী ভুইযাপাড়া গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।