মো. নুর উল্লাহ আরিফ, চরফ্যাশন॥
মা, আমার অফিস থেকে হাসপাতাল অনেক দূরে। আমার যদি কিছু হয়! কীভাবে হাসপাতালে নিবে? কথাগুলো হবিগঞ্জের আকিজ গ্রুপের ভেঞ্চার ফ্যাক্টরিতে কম্প্রেসার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত প্রকৌশলী রিয়াজের। বাড়ি থেকে কিছু দিন আগে কর্মস্থল হবিগঞ্জ যাওয়ার সময় তার মাকে বলছিলেন। কথাগুলো বলে নিহত রিয়াজের মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। বিষ্ফোরণে আহত হবার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিয়াজের মৃত্যু হয়। রিয়াজের মা, একমাত্র ভাই ইয়ামিন -বোন ও স্ত্রী বিলাপ করছেন। রিয়াজের নানা স্মৃতির কথা উল্লেখ করে বিলাপ করছেন পরিবারের সবাই। বড় সন্তান রিয়াজকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছেন বাবা কাজী আবু ইউসুফ। রিয়াজের এক বছর বয়সী সন্তান জানে না তার বাবার কি হয়েছে। সে একজনের কোলে চড়ে নির্বাক তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে।
রিয়াজ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করার পর ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করে। সর্বশেষ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে দেশের নামকরা কোম্পানিতে প্রকৌশলী কর্মকর্তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। সর্বশেষ দেশের অন্যতম প্রথম শ্রেণির কোম্পানি আকিজ গ্রুপের ভেঞ্চার কারখানায় দায়িত্বরত অবস্থায় সোমবার সকালে কম্প্রেশার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিয়াজ মারা যায়। এ দুর্ঘটনায় রিয়াজসহ চারজন মারা যায়। আহত হয় দুই জন।
রিয়াজের সহপাঠীরা জানান, রিয়াজ ছিল প্রাকটিসিং মুসলিম। নিপাট ভদ্রলোক ছিল সে। কারো সাথে কখন ই মনোমালিন্য হয়নি তার। নিহত রিয়াজের এক বন্ধু জানায়, জন্মদিবসে রিয়াজ আমাদের ছেড়ে চলে গেল পরজগতে। তার সাথে আর কখনো দেখা হবে না। এলাকাবাসীও তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান। পুরো চকবাজার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়নের চকবাজার এলাকায় নিহত রিয়াজের বাড়ি।