শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
Mitha Mamla
Mitha Mamla

বরিশালে ভাসুরের জমি আত্মসাৎ করে মামলা দিয়ে হয়রানি

বিশেষ প্রতিবেদক: বরিশাল ব্যাপ্টিষ্ট মিশন রোডে এক প্রবাসীর দালান সহ একটি বাড়ি প্রতারণার মাধ্যেমে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এরপর সেটিকে নির্বিঘ্নে ভোগ দখল করার জন্য উল্টো ঐ প্রবাসীকে মামলাদিয়ে হয়রানী করছে দখলদার ব্যক্তিরা। ভুক্তভোগী প্রবাসীর নাম আকন কবীর। আর অভিযুক্ত ব্যক্তি তারই আপন ছোটভাই আকন আজাদ।

সম্প্রতি দখলদার আকন আজাদের স্ত্রী রুপা খাতুন বাদি হয়ে তার ভাসুরের নামে উল্টো দখল চেষ্টা ও লুটের মামলা দিয়েছেন। একটি বন্ধ ঘরে তাদের নগদ ও স্বর্ণালংকার সহ ৪৪ লক্ষ টাকার মালামাল খোয়া গেছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আকন কবীর বলেন, আমি থাকি নেদারল্যান্ডে। আর আমার ছোটভাই আকন আজাদকে আমিই সুইজারল্যান্ডে এনে কাজ দিয়েছিলাম। এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে সে অনেক ক্ষমতাবান হয়েছে। সে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্বে আছে। আওয়ামীলীগের আমালে সাদিক আবদুল্লার ক্ষমতাবলে বরিশাল ব্যাপ্টিষ্ট মিশন রোডে আমার বাড়িটি দখল করে নিয়েছে। নানা কৌশলী প্রতারণায়
সে সেটা লিখিয়ে নিয়েছে। অথচ এখন তার স্ত্রী উল্টো আমাদের নামে মামলা দিয়েছে। তারা আমাকে হত্যার মিশনেরও নেমে আল্লাহর রহমাতে ব্যার্থ হয়েছে। আমি আজাদ ও তার স্ত্রী রুপার হাত থেকে নিরাপত্তা চাই।

এ বিষয়ে মামলার বাদি রুপা খাতুন বলেন, লুট হওয়া টাকাগুলো ছিল আমার হাসপাতালের ক্যাশের টাকা। বিস্তারিত কিছু বলতে পারবোনা কেননা আমি এখন মানষিকভাবে বিপর্যস্ত। আমি এ বিষয়ে পরে কথা বলবো। এজাহারে যা লেখা আছে তাই দেখে নিন।

এলাকায় খোজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী হারিছুর রহমানের বিশ্বস্ত ক্যাডার ছিলেন সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ওরফে আকন আজাদ। গৌরনদী পৌর নির্বাচনী কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। তাছাড়া বৈদেশিক টাকার প্রভাব খাটিয়ে গৌরনদী এলাকায় একটি স্বসস্ত্র ক্যাডার বাহিনী গড়ে তোলেন আকন আজাদ। বিভিন্ন জায়গায় জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল তারা। আকন আজাদের এই বাহিনীকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যেতেন মেয়র হারিছ। অপরদিকে হারিছের আশির্বাদপুষ্ট হওয়ায় আজাদের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারতো না।

বরিশাল ব্যাপ্টিষ্ট মিশন গল্লিতে আপন বড় ভাই কবির আকনের বাড়িটি প্রকাশ্য দিবালোকে দখলে নেন আজাদ। সেই দখল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় গৌরনদী থেকে গাড়ি ভাড়া করে ক্যাডার নিয়ে এসে নিজের বোন ভাগনি ও ভাইকে মারধর করান। তাছাড়া গৌরনদীর বেজগাতী এলাকায় সুইজ হাসপাতাল এবং বাটাজোড়ে আরেকটি ক্লিনিক গড়ে তোলেন। দুটো ক্লিনিকই তিনি চালাতেন হাতুরে ও কোয়াক ডাক্তার দিয়ে। কম বেতনে ভুয়া নার্স নিয়োগ দিয়ে তাদের দ্বারা খুলে বসেন এক কসাইখানা। সিজার ও অপারেশন করিয়ে গলাকাটা বিল ধরা হলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস রাখতো না। তাছাড়া একাধিক রোগী ভুল চিকিৎসায় মারা গেলেও আওয়ামী লীগের এবং হারিছের প্রভাব খাটিয়ে তা চাপা দিয়ে দেন।

অবশেষে প্রণয়ডোরে জড়িয়ে নিজ হাসপাতালে কর্মরত নার্সকে বিয়ে করেন। ওদিকে সুইজারল্যান্ডে এক খৃষ্টান নারীকে বিয়ে করে সেখানেও পেতেছেন সংসার। উভয় সাংসারেই তার সন্তান রয়েছে। নিজে এখন কোন ধর্মের অনুসারী তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেনা তার পরিবারও।
এদিকে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের আগেই অবস্থা বুঝতে পেরে দেশ ছাড়েন আকন আজাদ। এরপর পুরো জুলাই জুড়ে ছাত্র জনতার আন্দোলন দমনে সুইজারল্যান্ড থেকে হারিছকে টাকা পাঠান তিনি। ফেসবুকে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে থাকেন। সম্প্রতি সাবেক মেয়র হারিছ সহ বেশ কয়েকজন ক্যাডারের নামে দুটি মামলা হলেও অজ্ঞাত কারনে ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে আজাদ। এ কারনে আতঙ্কে রয়েছে এলাকার ভুক্তভোগীরা। হয়তো টাকার জোরে আবার কোন বিএনপি নেতার কাধে ভড় করে এলাকায় প্রভাব ছড়াবে আজাদ। এমন আশঙ্কার জায়গা থেকে এলাকাবাসী দাবি করেন, অতি দ্রুত আকন আজাদের সকল অপকর্ম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক।

এ বিষয়ে আকন আজাদ বলেন, আমার বিরূদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা। তবে আমি যা যা করেছি তা মেয়র হারিছ আমাকে ব্যাধ্য করে করিয়েছে। কেননা তখন তার কথার বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিলনা।

আরো পড়ুন

শেবামেকে কমপ্লিট শাটডাউনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির তৃতীয় দিন আজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *