হিজলা প্রতিনিধি: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে বাংলা অর্থসহ কুরআন পাঠ, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রবীণ ও গুণীজন সম্মাননসহ ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে রাবেয়া আল নূর মসজিদ।
বরিশালের হিজলা উপজেলার পশ্চিম কোড়ালিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠানটিতে বাদ আসর শুরু হয় কার্যক্রম। রমজান মাসজুড়ে স্থানীয় মুসল্লিদের জন্য প্রতিদিন বাংলাঅর্থসহ সহীহভাবে পবিত্র কুরআন পড়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠানটি ধর্মীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মানকল্যাণে মসজিদের ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
আলোর কথা সম্পাদক ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান খবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মানবাধকার কর্মী মাহবুবুল হক সুমন তালুকদার। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ এবতেদায়ী মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বরিশাল জেলা সভাপতি ও সমাজসেবক হাবিব প্যাদা, স্থানীয় শিক্ষকসহ মসজিদ কমিটির সদস্যরাও এসময় বক্তব্য রাখেন।
ভাষা শহীদদের স্মরণে আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষার জন্য রক্তদানের ইতিহাস সারাবিশ্বে বিরল ঘটনা। বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষায় এ লড়াই পরবর্তীতে জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে সহায়তা করে। মহান এ ইতিহাস ও অবদানের প্রতি স্বীকৃতি ও সম্মানস্বরূপ সারাবিশ্বে পালন করা হচ্ছে দিবসটি।
অর্জিত এ সম্মানকে জাতির জন্য আরও অর্থবহ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা।
এর আগে দিনব্যাপী আয়োজনে রচনা প্রতিযোগিতা, কেরাত ও কুরআন তেলাওয়াতে অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কৃত করা হয়।
এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উপহার দেন শিল্পপতি নাজমুল কবির আজম। ভবিষ্যতে দুস্থদের বিনাসুদে ঋণ ও মুসল্লিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান বলেন, ‘ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, হালাল কর্মসংস্থান তৈরি ও সামাজিক সম্প্রীতি তৈরিতে মসজিদভিত্তিক জনহিতকর কাজের পরিধি বাড়াতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ইসলামী আলোচকরা–প্রতিটি মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা তৈরিতে পরিচালনা কমিটি ও ইমামদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
রাবেয়া আল নূর মসজিদের পরিচালনায় হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও মুলাদীসহ আশপাশের প্রত্যন্ত এলাকার রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।
মায়ের ভাষার প্রতি সম্মান দেয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন মাওলানা ফয়জুল ইসলাম।
মহান আল্লাহ প্রত্যেক ভাষাভাষীর ওপর আসমানি কিতাব দিয়ে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন, যাতে ওই জাতির লোকজনকে সহজে বোঝাতে সক্ষম হন তারা। মাতৃভাষায় পবিত্র কুরআন পড়লে এ থেকে আরও বেশি উপকৃত হবে মুসলমানরা। বাংলা অর্থসহ কুরআন পড়ার তাগিদ দেন আলোচকরা।
সবশেষে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।