শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

কাঠালিয়ায় ফ্যাসিবাদের দোসর এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী

মামুনুর রশীদ নোমানী বরিশাল প্রতিনিধি
কাঠালিয়া উপজেলা এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান ।ঘুস ছাড়া চেয়ার থেকে উঠেন না।ঘুস না দিলে কোন কর্ম করেন না।এমন কি ঘুস ছাড়া স্বাক্ষরও করেন না।দুমকি ,রাজাপুরের পর কাঠালিয়ায় যোগদান করেই ঘুষ বানিজ্যে মেতে উঠেছেন।
এলজিইডির প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন।মামলা -মোকদ্দমার মাধ্যমে রাজস্বখাতে স্থায়ী হোন জিয়াউর রহমান। ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগের সময় ছিলেন আওয়ামীলীগের ঘোর সমর্থক।পরিচয় দিতেন সাবেক হুইপ আসম ফিরোজের।৫ আগষ্টের পরে ভোল্ট পাল্টে এখন বিএনপি সাজার চেষ্টা করছেন।
তিনি এলজিইডিতে যোগদানের পর থেকে ঘুস ছাড়া কোনো কাজ অনুমোদন করছেন না। টেন্ডার অনুমোদন থেকে শুরু করে বিল ছাড় পর্যন্ত বিভিন্ন হারে ঘুস আদায় করেন। এলজিইডির নিজস্ব রোলার না থাকায় বাইরের রোলার ব্যবহারের অনুমতিতেও তাকে দিতে হয় ঘুষ।
যত সম্পদ:
জ্ঞাত আয় বহির্ভুতভাবে তিনি বরিশাল সিটিতে জমি ক্রয় করেছেন।বাউফলেও জমি রয়েছে নামে বেনামে শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঢেবে গেছে ব্রিজ :
কাঠালিয়া উপজেলার ৫ নং শৌজলিয়া ইউনিয়নের সোনার বাংলা বাজার সংলগ্ন তালগছিয়া গ্রামের খালে প্রায় ২ কোটি ২২ লক্ষ টাকায় নির্মাণাধীন গার্ডার ব্রিজ ২২ জুন রাতে ঢালাই দেয়ার পরেই রাতে ঢেবে গেছে ব্রিজটি।ব্রিজটির তদারকির দ্বায়িত্বে ছিলেন জিয়াউর রহমান।তার গাফিলতি ও তদারকির অভাবে ব্রিজটি ঢেবে গেছে।কারন হিসেবে স্থানীয় লোকজন জানায়,জিয়াউর রহমান ঢালাইয়ের দিন ছিলনা।নিম্মমানের মালামাল দেয়ার কারনেই ব্রিজটি মাঝখান দিয়ে ঢেবে গেছে।
ব্রিজটির ঠিকাদার কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বুলবুল। ঠিকাদার পালিয়ে থাকলেও তার পক্ষে একদল লোক উপ সহকারি প্রকৌশলী জিয়াউর রহমানের সাথে আতাত করে ব্রিজের নির্মান কাজ করে আসছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, নিম্নমানের খোয়া, সিমেন্ট, বালু ও রড কম দিয়ে ঢালাই দেয়ার ফলে ঢেবে গেছে ব্রিজটি।
স্থানীয়রা বলেন,কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে ফ্যাসিবাদের  দোসর জিয়া কে বলার পরেও কর্নপাত করেন নি। বাধা দিলে দিনে ঢালাই না দিয়ে রাতের আঁধারে ঢালাই দেয়।ফলে যা হবার তাই হয়েছে।
 রাষ্ট্রীয় সম্পদ মনে না করে এভাবেই কাঠালিয়া উপজেলায় বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিম্নমানের কাজের সহযোগিতা করে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
 এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক এর কাজে নিম্নমানের কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কাঠালিয়ায় ১ বছর ৩ মাস ধরে কর্মরত। এর আগে দুমকি ও রাজাপুর উপজেলায় ছিলেন ।সেখানেও রয়েছে দুর্নীতি,ঘুস ও অনিয়মের অভিযোগ।
অর্জিত সম্পদের সঠিক হিসেব নেই তার কাছে।তবে ১০ম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা( শুরুতে প্রকল্পে ছিলো পরে মামলা করে সরকারি করেছে) বরিশাল শহরে  জমি রয়েছে, তার বউয়ের কাছে প্রায় ৫০/৬০ ভরি স্বর্ণ আছে। এছাড়া সে প্রায়ই বরিশালে এসে মদ, জুয়া খেলে দু হাতে  টাকা উড়ায়। রয়েছে নারী কেলেংকারীরও অভিযোগ।
জিয়াউর রহমান টাকার বিনিময়ে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও ডিজাইনে যে পরিমাণ রড ধরা থাকে তার চেয়ে কম দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশে যার ফলে উপরে ব্রিজটির মাঝ বরাবর ঢেবে গেছে।
কাঠালিয়া উপজেলা এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঘুস ছাড়া কোনো কাজ অনুমোদন করছেন না। টেন্ডার অনুমোদন করা সহ নানা দুনীতি অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী নীরব ভূমিকা পালন করছে জিয়াউর রহমানের দুর্নীতি আর অনিয়মের ব্যাপারে।
 জিয়াউর রহমান ঠিকাদাররা ঘুস না দিলে
বিল প্রদান প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত বিলম্ব, অজুহাতে কাজ আটকে রাখা এবং আর্থিক সুবিধা ছাড়া কার্যক্রম শুরু করতে না দেয়া এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। তিনি এ পদে আসতে মোটা অংকের টাকা খরচ করেছেন বলে দম্ভোক্তি করেন। সহায় সম্পদ গড়তর ঘুস বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।সাধারণ জনগণের দাবি, একজন অসৎ ও বিতর্কিত কর্মকর্তার নেতৃত্বে কাঠালিয়ায় উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তারা অবিলম্বে জিয়াউর রহমান অপসারনের দাবি করেন। অভিযোগ অনুসারে, তিনি নানা কৌশলে রাজাপুর থেকে কাঠালিয়া অবস্থান করে আসছেন এবং তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।এলজিইডির বিভিন্ন ভুয়া বিল ও ভাউচার তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি নিজ নামে এবং বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন, যার মধ্যে ব্যাংক ব্যালান্সের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পত্তি অর্জন রয়েছে।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানান, জিয়াউর রহমান  এক বছর তিন মাস কাঠালিয়ায় কর্মরত রয়েছেন। রাজাপুর থেকে দুনীতির কারনে বদলি হলেও, অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কাঠালিয়া দুনীতি করে টিকে থাকার রহস্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সহায়তায় নানা কৌশল অবলম্বন করে টিকে রয়েছেন।
দুর্নীতিতে বেপরোয়া এই কর্মকর্তা  আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেন।
কাঠালিয়ার সাধারন মানুষ তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জিয়াউর রহমান বলেন,আমার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ঠিকাদার ঢালাই দিয়েছে। ব্রিজ ঢেবে গেছে এটা সত্য।ঠিকাদার পুনঃরায় ব্রিজ ঠিক করে দিবে।তিনি বরিশাল সিটিতে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন ঋন করে বলে জানান।তিনি অভিযোগের আংশিক সত্য ও আংশিক মিথ্যা বলে জানান।

আরো পড়ুন

ঝালকাঠিতে খবরেরকাগজ ‘বন্ধুজন’ জেলা কমিটি গঠন

জাহাঙ্গীর আলম।। দৈনিক খবরের কাগজ–এর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বন্ধুজন’–এর ঝালকাঠি জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *