শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় চাকুরী দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ

আসাদুজ্জামান আসাদ পিরোজপুর প্রতিনিধি।।

ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ চাকুরী দেয়ার কথা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নদমূলা গ্রামের আলমগীর হোসেন গাজীকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

গতকাল শনিবার সকাল ১১ টায় ভান্ডারিয়া থানার সামনে এলকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। অভিযুক্ত আলমগীর গাজী নদমূলা গ্রামের আলী আহমদ গাজীর ছেলে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, সৌদি প্রবাসি লোকমান হোসেন গাজী, মো. মামুন সরদার, মজিবুর রহমান, ইব্রাহিম হাওলাদার, মো. জাকির হোসেন খান, মো. ইউছুব হাওলাদার, সাথী আক্তার, কাওছার হোসেন সরদার, মো. হোসেন গাজী। উক্ত মানববন্ধনে এলাকার কয়েকশ নারী পুরুষ অংশ নেন।

বক্তরা বলেন, বাগেরহাটে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নদমূলা গ্রামের বাসিন্দা গত দুই বছরে নদমূলা গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারনা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা ফেরত চাইতে গেলে মারধর করাসহ, মিথ্যা মামলায় হয়রানিসহ বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে এই আলমগীর গাজী।

নদমূলা গ্রামের মো. শাহজাহান সরদারের ছেলে পিরোজপুর আদালতের নোটিশ জারি কারক মো. মামুন সরদার বলেন, আমার মামাতো ভাই ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের রাব্বি হাওলাদারকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ২০২৪ সালে ৫ লক্ষ টাকা নেয়। চাকুরী দেয়া তো দুরের টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকে গালাগালসহ শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করতে আসে।
একই গ্রামের আ. রব হাওলাদার এর ছেলে ইব্রাহিম হাওলাদারকে পুলিশে চাকুরী দেয়ার কথা বলে চেকের মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। ইব্রাহিম হাওলাদার জানান, চাকুরীতো দিতে পারেনি পাওনা টাকা চাইলে উল্টো মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় সে। আঃ মালেক গাজী জানান, তার ছেলেকে খাদ্য অধিদপ্তরে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ২ লক্ষ টাকা নেয়। মৃত মোসলেম খান এর ছেলে জাকির খানএর কাছ থেকে খাদ্য অধিদপ্তরে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা নেয়। একটি গভীর নলকুপ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে পিয়ারা বেগম কাছ থেকে নেয় ২৫ হাজার টাকা বলে তিনি জানান। বিআরটিএ থেকে মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দেয়ার কথা বলে মো. কাওছার সরদার এর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়,কিন্তু আজও পাননি তিনি। বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দপ্তুরী পদে চাকুরী দেয়ার কথা বলে আরিফ গাজীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নেয়। একই গ্রামের অসহায় কোহিনুর বেগমকে বয়স্ক ভাতা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ২ হাজার ৫শত ঘুষ নিয়ে আজও ফেরত দেয়নি।

এছাড়া প্রতিবেশী.সৌদি প্রবাসী মো.লোকমান হোসেন গাজী জানান, আলমগীর গাজী একজন ভূসিদস্যু, সন্ত্রাসী এবং প্রতারক সে নিজে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী হয়েও এলাকায় এসে নিজেকে বাগোরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বড় কর্মকর্তা এবং শেখ হেলালের সঙ্গে তার সখ্যতা আছে পরিচয় দিয়ে এলকার অর্ধশত লোকে কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি সৌদি থেকে আসার পরে আলমগীর তার বাড়ী ঘরে হামলা চালায়। তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করাসহ ঘর বাড়ী ভাঙচুর চালায় আলমগীর গাজী ও তার ছেলে সিফাত ও সিহাম।

ভুক্ত ভোগীরা তার কাছে টাকা ফেরত চাইতে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার কথা বলে হুমকি দেয়। এমনকি শারীরিকভাবে লাচ্ছিত করে। এ সব টাকা আত্মসাৎ করে ইতিমধ্যে আলমগীর গাজী বাগেরহাটে ও খুলনায় দুটি বাড়ী কিনেছেন এই আলমগীর গাজী।

লোকমান গাজী আরও জানান, শুধু মাত্র অর্থ আত্মসাৎ করেই খান্ত হয়নি এই আলমগীর গাজী। সে একজন চরিত্রহীন লম্পট, এ পর্যন্ত একাধিক বিয়ে করেছেন। অন্য বউকে ফুসলিয়ে ভাগিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা বিচারাধীন। মানববন্ধনে বক্তারা অনতি বিলম্বে আলমগীর গাজীকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার পূর্বক বিচার দাবী জানান।

অভিযুক্ত বাগেরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক আলমগীর গাজী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন এলাকার একটি পরিবারের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিরোধ আছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে এগুলো হচ্ছে। এ চক্রটি তিনি এবং তার স্ত্রী এবং ছেলে ওপর হামলা পর্যন্ত চালিয়েছে। এ ঘটনা তিনি মামলা দায়ের করেছেন।

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *