সোলায়মান তুহিন গৌরনদী প্রতিনিধি।।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ইল্লা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) জান্নাতুল নাইমার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান কর্মসূচি, প্রাথমিক চিকিৎসা ও সরবরাহ সাপেক্ষে ওষুধ বিতরণ, জরুরি রোগীকে হাসপাতালে প্রেরণ এবং গর্ভবতী মায়েদের সেবা দেওয়ার কথা। তবে ইল্লা কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত জান্নাতুল নাইমার দায়িত্বে অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এসব সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি সচেতন মহলের।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে টানা দুই কর্মদিবসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিস চলাকালীন সময়েও ক্লিনিক তালাবদ্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও জান্নাতুল নাইমা সাধারণত সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আসেন এবং দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যেই চলে যান। ফলে নিয়মিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি ২০১১ সালে সিএইচসিপি পদে নিয়োগ পান এবং তখন থেকেই ইল্লা কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত আছেন। প্রায় ১৪বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করলেও উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জান্নাতুল নাইমা বলেন,“আমার অফিস করার সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা। তবে আমি দুইটার পর থাকি না। যদি কেউ সেবা নিতে আসে এবং ফোন দেয়, তাহলে আমি এসে সেবা দিই। বর্তমানে ক্লিনিকে কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই, তাই নিয়মিত অফিস করি না।”
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহে ৬দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। এখানে ২৭প্রকার ঔষধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়, যার মধ্যে ঠান্ডা, জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি ও জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ রয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. শাহ আলোম সন্যামত বলেন, “আজকেই অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহতা জারাব সালেহীন জানান, “আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। আপনার মাধ্যমে অভিযোগের বিষয়টি জানলাম। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগে এলাকায় গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হলে তা এলাকার সার্বিক উন্নয়নকে ধাক্কা দেয় এছাড়া “কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রান্তিক মানুষের জন্য জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্ববোধহীনতা সেবার ধারাবাহিকতাকে বিঘ্নিত করছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত সত্যতা যাচাই করে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করেন সচেতন মহল।
স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে। তারা জানান, স্বাস্থ্যসেবার মান এবং নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করাই এলাকার সামাজিক ন্যায়বিচারের অন্যতম ভিত্তি।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।