সাকী মাহবুব রাজবাড়ি প্রতিনিধি।।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজবাড়ীর পাংশায় ৯৮টি মন্দির প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে জোরেশোরে। খড়, কাঠ, পাটের আঁশ আর মাটি দিয়ে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। পূজা যত ঘনিয়ে আসছে, তাদের ব্যস্ততাও তত বাড়ছে।
উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমাশিল্পীরা কেউ প্রতিমা গড়তে আবার কেউ সাজাতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়া ও পারিশ্রমিক না বাড়ায় হতাশ শিল্পীরা।
পাংশা পৌরসভার মৈশালা পালপাড়া মন্দিরে কাজ করতে দেখা যায় প্রতিমা কারিগর শ্রী সুবল চন্দ্র মহন্তকে। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে খড় ও মাটির কাজ শেষ করেছি, এখন মাটির ফিনিশিং ও রংতুলির কাজ হচ্ছে।
আর এসব প্রতিমা তৈরীতে আমাদের দম ফেলার ফুসরত নেই। দেবী মা দুর্গা তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী লক্ষী এবং দেব সেনাপতি কার্তিক ও গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুটিয়ে তুলবো নিপুন হাতের ছোঁয়ায়।তিনি আরও বলেন, এ বছর ৫টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ ধরেছি। ভিন্ন ভিন্ন চুক্তিতে ৩জন মিলে প্রতিমা তৈরি করছি। প্রতিটি প্রতিমা প্রতি সর্বোচ্চ ৩০থেকে ৪০হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেয়া হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি বাজারে চাহিদার তুলায় মজুরি কম পেলেও কাজ করতেই হবে। তাই পূজা শুরুর দিন পর্যন্ত রঙ এর কাজ করতে হবে। তবে চাহিদার তুলায় আমরা মজুরি কম পাচ্ছি।
নাদুড়িয়া (দত্তপাড়া)সর্বজনীন দূর্গাপূজা মন্দিরের উপদেষ্টা কমল চন্দ্র মন্ডল বলেন,
“পুতুলপূজা করে না হিন্দু কাঠ মাটি দিয়ে গড়া, চিন্ময়ী মাঝে মৃন্ময়ী হয়ে, হয়ে যায় আত্নহারা।” মানুষের মনের মধ্যে যে আসুরিকভাব থাকে তা বলিদান করা।মায়ের সান্নিধ্যে নিজেকে সপে দেয়া, যাতে নিজের আসুরিকভাব দূর হয়। সেই সাথে জাগতিক সুখ শান্তির জন্য মায়ের নিকট প্রার্থনা করা।
পাংশা উপজেলা পুজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা বিধান কুমার বিশ্বাস বলেন উপজেলায় এবারে ৯৮ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্দির গুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। তাছাড়া সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যাপারে অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলোকসজ্জাসহ নানাভাবে সাজানো হবে মণ্ডপ গুলোতে। এখন ঢাকের তালে পূজা শুরু হওয়ার অপেক্ষা মাত্র।
পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন জানান শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যাপক ভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে করে কোনো প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে। সে জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে মন্দিরে মন্দিরে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা টিম ও পুলিশের টিম কাজ করছে।
এছাড়া উৎসব চলাকালীন সময়ে প্রশাসনিক সর্বাত্মক নজরদারি রয়েছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু দারদা জানান, উপজেলায় এবারে ৯৮টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি মন্ডপে সরকারের পক্ষ থেকে পূজা উদযাপন উপলক্ষে ৫০০ কেজি করে চাল প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি মন্ডপে সর্বাত্মক প্রশাসনের নজরদারি থাকবে। যাতে কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হবে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।