মোঃ মাহতাব হাওলাদার মহিপুর প্রতিনিধি।।
দীর্ঘ তিন বছর মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছেন ইয়াসিন, চিকিৎসার জন্য এখনো দরকার প্রায় দেড় লাখ টাকা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আকুতি ইয়াসিনের।
পটুয়াখালীর মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের ইয়াসিন (৩০) গত তিন বছর ধরে শরীরে মরণব্যাধি ক্যানসার নিয়ে লড়ছেন জীবনের সঙ্গে। সংসারে মা, তিন সন্তান, স্ত্রী ও এদের নিয়েই এখন তার বেঁচে থাকার সংগ্রাম।
বহু বছর আগে মারা গেছেন বাবা। এখন মায়ের সামান্য সহায়-সম্বলই ইয়াসিনের পরিবার টিকে থাকার শেষ আশ্রয়। বেড়িবাঁধের বাইরে বনভূমির পাশে ছোট একটি ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবারটি।
চিকিৎসার জন্য এখনো দরকার প্রায় দেড় লাখ টাকা। অভাব অনটনে ক্লান্ত এই পরিবার সেই অর্থ জোগাড় করতে পারছে না। শেষ সম্বলটুকু চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে গেছে অনেক আগেই। উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ যাত্রা থমকে রয়েছে অর্থের অভাবে।
ইয়াসিন বলেন, দীর্ঘ তিন বছর ধরে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছি। টাকার অভাবে অনেক সময় ওষুধও বন্ধ রাখতে হয়। ডাক্তার বলেছেন, নিয়মিত চিকিৎসা না হলে অবস্থার অবনতি হবে। কিন্তু এখন আর পারছি না চিকিৎসার খরচ সামলানো অসম্ভব হয়ে গেছে। চিকিৎসায় এখনো দরকার প্রায় ২ লাখ টাকা। যা সবাই সম্বল ছিল সবকিছু বিক্রি করে চিকিৎসা করেছি এখন শুধু সম্বল আছে বাড়িটুকু। তিন সন্তান স্ত্রী, মাকে নিয়ে কিভাবে বাকি দিনগুলো কাটাবো আল্লাই জানে। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার প্রতি একটু সহানুভূতি দেখাতো তাহলে আমি আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারতাম।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহবাব বলেন,
ইয়াসিন দীর্ঘ তিন বছর ধরে অসুস্থ রয়েছেন। সম্বল যা ছিল সবই চিকিৎসার পিছনে ব্যয় করেছেন মা তার স্ত্রী সন্তানদের কে নিয়ে রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে আগের জীবনে ফিরতে পারবেন ইয়াসিন।
মা কহিনূর বেগম কান্না জরিত কন্ঠ বলেন, আমার ছেলেটা বাঁচুক এই আশা নিয়েই বেঁচে আছি। সব বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েছি, এখন ঘরে খাওয়ারও কিছু নাই। যদি কেউ সাহায্য করত, আমার ছেলেটা হয়তো বেঁচে যেত।
স্ত্রী সাথী বেগমের আকুতি তিনটা ছোট সন্তান আর অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে দিন কাটান ভয় আর দুঃখে। স্বামীর চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে টাকার অভাবে। সমাজের ভালো মানুষদের কাছে অনুরোধ আমাদের দিকে একটু তাকান।
মেয়ে লামিয়া বলেন, আমার আব্বু অসুস্থ, টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। কেউ যদি আমার আব্বুকে সাহায্য করত তাহলে চিকিৎসা করাতে পারতাম।
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ইয়াসিন খুবই পরিশ্রমী মানুষ ছিল। অসুখের পর সব শেষ হয়ে গেছে। এখন তার পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাওসার হামিদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।
জীবন আর মৃত্যুর এই সীমারেখায় দাঁড়িয়ে ইয়াসিনের একটাই প্রত্যাশা আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই। তার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য সমাজের মানবিক মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
যোগাযোগঃ মোঃ ইয়াসিন (নিজ) 01890084147 (বিকাশ)
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।