মোঃ আল-আমিন, বাউফল
খেজুর গাছিদের এখন আর নেই আগের মত কোন ব্যস্ততা। নেই কোন তাড়া। আগের মতো দেখা যায় না কে বা কারা খেজুরের রস কার আগে সংগ্রহ করতে পারে এমন কোন প্রতিযোগিতা। এভাবেই কালের বিবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেজুরের রস। গ্রামগঞ্জে আগের মতো খেজুরের গাছও দেখা যায় না।
পটুয়াখালীর বাউফলে থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে খেজুর রসের মতো আরো অনেক কিছু। খেজুর গাছিদের এখন আর নেই আগের মত কোন ব্যস্ততা। নেই কোন তাড়া। আগের মতো দেখা যায় না কে বা কারা খেজুরের রস কার আগে সংগ্রহ করতে পারে এমন কোন প্রতিযোগিতা। এভাবেই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেজুরের রস।
গ্রামগঞ্জে আগের মতো খেজুরের গাছও দেখা যায় না। এক সময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের মানুষ গাছ ছিলানো (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে প্রকৃতির সেরা উপহার সমূহের মধ্যে অন্যতম খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে এ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন। একসময় খেজুরের রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েস ছিল দক্ষিণাঞ্চলের সব শ্রেণির মানুষের নবান্নের সেরা খাদ্য সামগ্রী।
খেজুর রস দিয়ে অল্প সময়ে তৈরি করা হতো পাটালি গুড়, শ্রীড় মিঠাসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার। সময়ের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস। প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইয়লা সব ধরণের গাছ মাটিতে শুইয়ে দেয়। এসময় অনেক খেজুর গাছ মারাও যায়। এক শ্রেণির ইটভাটা মালিকরাও ইট পোড়ার কাজে খেজুর গাছ ব্যবহার করায় খেজুর গাছ দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করে দেয়।
ফলে এ অঞ্চলে খেজুর রস দুষ্পাপ্য হয়ে পড়েছে। আজ থেকে ১৫-২০ বছর পূর্বেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতো গাছিরা। গত ২০ বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিনাঞ্চলে খেজুর গাছের সংকট দেখা দেয়ায় রস পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।
ফলে দিনে দিনে খেজুর রস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামগঞ্জের মানুষ। কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে খেজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েসসহ সুস্বাদু নবান্নের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্যে নবান্নকে বরণ করত এ অঞ্চলের মানুষজন। এখন আর খেজুর রস না পাওয়ায় নবান্নের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।