স্বরূপকাঠি প্রতিনিধি
হঠাৎ সন্ধ্যা নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কারণে বিলীন হওয়ার পথে স্বরূপকাঠি ও কাউখালী উপজেলার সংযোগকারী একমাত্র আমরাজুড়ি ফেরিঘাট, পাশাপাশি মসজিদ, দোকান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। নদী ভাঙনের ফলে স্থানীয় মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডে বলছে, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে।
পিরোজপুর জেলা সদরের সঙ্গে স্বরূপকাঠি ও কাউখালী উপজেলার সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হলো আমরাজুড়ি ফেরিঘাট। লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের সুবিধা দেয় এই ফেরিঘাট, যা বর্তমানে তীব্র নদী ভাঙনের কবলে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে। সন্ধা, গাবখান ও কঁচা নদীর মোহনায় ফেরিঘাটসহ আশেপাশের এলাকা হঠাৎ করে তীব্র ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে, যার ফলে স্থানীয়রা দিশেহারা।
নদী ভাঙনের কারণে উভয় পাড়ের প্রায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীনের পথে। হুমকির মুখে রয়েছে শতশত বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। স্থানীয়দের দুর্ভোগ এখন চরমে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দুই বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন রোধে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করলেও কোনো কার্যকর ফল দেখা যায়নি। তাই এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, নদী ভাঙন ঠেকাতে এখনই টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দা খান বেলায়েত হোসেন জানান, সন্ধ্যা নদীর এক পাড়ে অবস্থিত আশোয়া গ্রাম আর অন্য পাড়ে আমরাজুড়ী গ্রাম। নদী ভাঙনের কারণে এরইমধ্যে দুই পাড়ের শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ২টি মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যে পাইলিং দিয়েছে তা মূলত সরকারি অর্থের অপচয়; এতে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব নয়। দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাধ তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারণে ফেরির পন্টুন মেরামতের জন্য মাঝে মাঝে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসকে ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
আর পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবু জাফর মো. রাশেদ খান জানান, আমরাজুড়ি ফেরিঘাটের দুই প্রান্তে প্রায় ১৫০০ মিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অস্থায়ী ভিত্তিতে নদীর তীর রক্ষার জন্য প্রায় ৪৭ লাখ টাকার বাজেটে আপৎকালীন বাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজ আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।