বশির উল্লাহ বাসার, বেতাগী (বরগুনা)।।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বেতাগী-লঞ্চঘাট কাঁচা রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তা পাঁকাকরণ না হওয়ায় দুই ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষকে বছরের পর বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষার মৌসুমে এ রাস্তার করুণ অবস্থা দেখার যেনো কেউ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এলাকার কয়েক হাজার মানুষের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট কার্পেটিং সড়ক থেকে রাস্তাটি শুরু হয়ে উত্তর দিকে বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে সরাসরি বেতাগী পৌরশহরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন আঞ্চলিক মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। কিন্তু রাস্তাটি লঞ্চঘাট থেকে উত্তরদিকে ২ কিলোমিটার সম্পূর্ণ কাঁচা। ২ কিলোমিটার পরে রাস্তাটির বাকি অংশ কার্পেটিং করা যা বেতাগী পৌরশহরে মিলিত হয়েছে। রাস্তাটির উভয় প্রান্ত কার্পেটিং করা হলেও মাঝের ২ কিলোমিটার এখনো কাঁচা রয়ে গেছে।
সম্প্রতি বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে কয়েক মাস আগে বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমের কারণে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে রাস্তাটির কিছু অংশ মাটি দিয়ে উঁচু এবং কিছু অংশ নিচু হয়ে পড়েছে। এতে রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা বাণিজ্য।
মাল বাড়ির মো. মনির আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তায় মাটি ফেলে রাখায় কোথাও কিছু অংশ উঁচু এবং কোথাও কিছু অংশ নিচু। গাড়ি চলতে পারে না। মানুষ কোনো রকম হেঁটে রাস্তায় চলে। গাড়ি না চলার কারণে মুরগির খাবার আনতে পারছি না। যে কারণে মুরগির খামারে মুরগি তুলতে পারছি না। রাস্তাটি দ্রুত সমান করলে ভালো হয়। আর পরে পাঁকা করলে আরও ভালো হয়। আমরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারি।’
একই বাড়ির আবদুস সাত্তার মাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাস্তার কাজ যেন দ্রুত শেষ করা হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি। বর্তমানে রাস্তার যা অবস্থা, চলতে খুবই কষ্ট হয়।
এ ছাড়া একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই রাস্তা ব্যবহার করে এলাকার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাওয়া-আসা করে। এই রাস্তার পাশে কেওড়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝিলবুনিয়াসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাছুয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নে শেষ আর মোকামিয়া ইউনিয়নে শুরু এই রাস্তা দিয়ে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। রাস্তাটি দিয়ে বেতাগী, কেওড়াবুনিয়া, গাবুয়া, ছোট কেওড়াবুনিয়া, ঝিলবুনিয়া, ছোট মোকামিয়া, মোকামিয়া, মাছুয়াখালীসহ প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষদের প্রতিনিয়তই চলাচল করতে হয়।
এ রাস্তায় ভ্যান, ভটভটি, অটো রিকশা, মোটর সাইকেল, টমটম, মাহিন্দ্রাসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন চলাচল করতো যা এখন চলাচল করতে পারছে না। এতে মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এ কাজের ঠিকাদার মো. মনির হোসেন লাভলু বলেন, ইতিমধ্যে রাস্তার ৪০ শতাংশ কাজ করা হয়েছে। বর্ষার জন্য কাজ বন্ধ ছিলো। খুব দ্রুতই আবার কাজ শুরু করা হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ছোট মোকামিয়া থেকে বেতাগী পৌর শহরের দিকে ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মাটি দ্বারা সংস্কারের কাজ চলছে। তবে বর্ষা মৌসুমের জন্য আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে।’
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, জনদূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতার সাথে কথা বলে রাস্তার কাজটি দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।