শুক্রবার, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫
Gongamoti
Gongamoti

পর্যটকদের নজর কাড়ছে কুয়াকাটার ‘গঙ্গামতি’

মিজানুর রহমান: সাহিত্যপ্রেমী ও ভ্রমণ প্রিয়াসীদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করার মতো প্রায় ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ সৈকত এবং সবুজবেষ্টনীতে ঘেরা নিঃসন্দেহে একটি সুন্দর নাম গঙ্গামতি । বিশেষ করে প্রকৃতি নিপুণ হাতে নিখুঁতভাবে সাজানো এ চরটির সুন্দর নামটিকে আরও সুন্দর করেছে এখানাকার অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দয। সবুজবেষ্টনীর মাঝখান দিয়ে সমুদ্র মিলিত লেকটি বলা যায় গঙ্গামতির অংলকার। লেকের জোয়ার ভাটার স্রোতে চলা মাছ ধরা ট্রলারগুলো ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে যেনো প্রোমদতরী। ট্রলারে না উঠেও তীরে বসে ঢেউয়ের সঙ্গে মনে-প্রাণে দোল খায় ভ্রমণপ্রিয়াসীরা।

সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার পূর্বদিকে অবস্থিত গঙ্গামতি চর ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। প্রাণজুড়ানো মনোরম প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য পর্যটকদের স্বচ্ছ নীল জলরাশির একাধিক লেক আর প্রাকৃতির কারুকাজ খচিত বিশাল বেলাভূমি আকৃষ্ট করে। প্রকৃতির নিপূণ হাতে গড়া গঙ্গামতির চরের লেক ধরে আগত পর্যটকরা স্পিডবোট, ট্রলার অথবা নৌকা নিয়ে ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে।

স্বপ্নিল অনুভূতি নিয়ে গঙ্গামতি সৈকতে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের বুকচিরে সূর্যোদয় দেখা এক স্বর্গীয় আবেশ। সূর্য লাল আলো ছড়িয়ে দেয় গঙ্গামতির বেলাভূমিতে। সৈকতজুড়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি উচ্ছল করে তোলে অন্তর। ক্ষুদ্র কাঁকড়ার নিপুণ হাতে আঁকা নিখুঁত আল্পনা দর্শনার্থীদের নিয়ে যায় পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের নকশিকাঁথার মাঠে মৃত্তিকাগর্ভের কেঁচো ধরে ভোজনের দৃশ্য দেখা তো সৌভাগ্যের ব্যাপার। পাখির কলরবে মুখরিত ছইলা, কেওড়া, গেওয়া, বাইনসহ কয়েক’শ প্রজাতির বৃক্ষরাজি চির সবুজের স্বর্গে সাজিয়েছে এ চরের বনাঞ্চল। গহীন বনের ভেতর থেকে ছোট ছোট খালগুলো যেন লেকেরমতো মিলিত হয়েছে বঙ্গপসাগরের বিভিন্ন স্থানে। জোয়ারের পানি বাগানের বৃক্ষরাজির মূল ভিজিয়ে দেয়। ভাটার স্রোতের টানে বনের শুকনো পাতা ও গাছ থেকে জড়ে পড়া ফুলগুলো পাড়ি জমায় অজানা ঠিকানায়। ফলে ভাটায় সময় লেকটি আরও সুন্দর লাগে।

সাগরকন্যা কুয়াকাটায় এসে গঙ্গামতি না গেলে পর্যটকদের ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যায়। কুয়াকাটা জিরোপয়েন্ট থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে যেতে হয় গঙ্গামতির চরে। প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত গোটা গঙ্গামতি এলাকা একটি ছবির মতো জনপদ। সরকারের একটু সুনজর আসলেই সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ব্যাপক কদর বাড়বে। সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখার জন্য ছোটাছুটি করতে হবে না। বর্তমানে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও সরকারের গুরুত্ব প্রদানের অভাবে অপার সম্ভাবনার এ খাত জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারছে না। এই বিশাল এলাকায় পর্যটকদের দেখার মতো অনেকগুলো স্পট রয়েছে। এর মধ্যে দোলাই মার্কেট, ঝাউ বাগান, বাস্তব হারাদের নীড়, গঙ্গামতির বনভূমি, কড়াইবন ও ডুবোচর উল্লেখযোগ্য। গঙ্গামতির একটু সামনে রয়েছে বিশাল বড় একটি ডুবোচর। ভাটা হলেই নানা প্রজাতির দেশি ও অতিথি পাখি খেলা করে। তাছাড়া হাজারো জেলে সমুদ্রে মাছ শিকার করছে। চকচকে বালুর বেলাভূমির মধ্যে লবণাক্ত পানির লেক দেখতে খুবই ভালো লাগে। ওই অখ্যাত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারলে দিন আর রাত জোৎস্নার আলোর মতো সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। যোগাযোগ ও বিদ্যুতের উন্নয়ন করে ব্যাপক প্রচারণা করতে পারলে কুয়াকাটার পাশাপাশি আর একটি বিশ্ববিখ্যাত সমুদ্র সৈকত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি কুয়াকাটা পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠছে। আর এখানে আগত পর্যটকরা প্রভাতে ছুটে যায় গঙ্গামতির চরে সূর্যোদয় দেখতে।

আরো পড়ুন

পদ্মা মনসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত 

মো. সিরাজুল ইসলাম,কুঞ্জেরহাট: ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলা পদ্মা মনসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *